জীবনে এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের সবকিছুতেই দ্বিমত পোষণ করার প্রবণতা দেখা যায়। সামান্য বিষয় থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা—সবক্ষেত্রেই যেন তাঁরা ভিন্নমত প্রকাশ করতে চান।
এই ধরনের আচরণে অভ্যস্ত ব্যক্তিরা প্রায়ই নিজেদের অজান্তে অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে ফেলেন। সম্প্রতি, এমন একজন ব্যক্তি তাঁর এই স্বভাব পরিবর্তনের উপায় জানতে চেয়েছেন।
আসুন, মনোবিদের পরামর্শ অনুযায়ী এই বিষয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিরিক্ত দ্বিমত পোষণ করার মানসিকতা পরিবর্তন করা সম্ভব। এর জন্য প্রয়োজন নিজের আচরণের কারণগুলো ভালোভাবে উপলব্ধি করা এবং পরিবর্তনের জন্য সচেষ্ট হওয়া।
সাধারণত, এই ধরনের পরিবর্তনের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে।
প্রথমত, যারা সব সময় দ্বিমত পোষণ করেন, তাদের অন্যদের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। আপনার এই ধরনের আচরণ অন্যদের কেমন কষ্ট দেয়, তা বোঝার চেষ্টা করুন।
বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা থেকে শুরু করে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা—সবখানেই আপনার ভিন্নমত প্রকাশের কারণে অন্যদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। তারা হয়তো আপনার সঙ্গে কথা বলতে বা কোনো বিষয়ে নিজেদের মতামত জানাতে দ্বিধা বোধ করতে পারে।
দ্বিতীয়ত, অন্যের কথা মন দিয়ে শোনার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। আমরা যখন অন্যদের সঙ্গে কথা বলি, তখন তাদের কাছ থেকে নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করতে পারি।
তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলে, তাদের ভাবনা সম্পর্কে আমাদের ধারণা স্পষ্ট হবে। এতে করে, কোনো বিষয়ে দ্বিমত হলেও তা আলোচনার মাধ্যমে সুন্দরভাবে প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
তৃতীয়ত, ছোট ছোট পদক্ষেপের মাধ্যমে পরিবর্তন শুরু করা যেতে পারে। প্রথমে, সপ্তাহে অন্তত একটি আলোচনা এমনভাবে করার চেষ্টা করুন যেখানে আপনি অন্য কারো কাছ থেকে নতুন কিছু শিখতে পারবেন।
এতে আপনি ভিন্ন একটি মানসিকতা অনুভব করতে পারবেন এবং ধীরে ধীরে আপনার মধ্যে পরিবর্তন আসবে।
মনে রাখতে হবে, দ্বিমত পোষণ করা এবং আলোচনা করা—দুটোর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে আমরা একটি বিষয়ে বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে পারি, যা আমাদের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে।
কিন্তু, সবসময় শুধু ভিন্নমত প্রকাশ করলে, তা সম্পর্কের অবনতি ঘটায়।
সুতরাং, যারা অতিরিক্ত দ্বিমত পোষণ করার মানসিকতা থেকে মুক্তি পেতে চান, তাদের অন্যের অনুভূতিকে সম্মান করতে হবে, তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে এবং পরিবর্তনের জন্য ছোট ছোট পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian