যুদ্ধ শেষ হওয়ার আনন্দে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন তরুণী এলিজাবেথ: ৮০ বছর পরে ডায়েরির পাতা থেকে সেই স্মৃতিচারণা করলেন রাজা তৃতীয় চার্লস।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত দিনটি ছিল ১৯৪৫ সালের ৮ই মে। জার্মানির আত্মসমর্পণের মধ্যে দিয়ে ইউরোপে যুদ্ধের অবসান ঘটেছিল। সেই ঐতিহাসিক দিনটির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে লন্ডনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস তাঁর প্রয়াত মা, রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের একটি ডায়েরি থেকে পাঠ করেন।
অনুষ্ঠানটি হয় ‘ভি ই ডে ৮০: আ সেলিব্রেশন টু রিমেম্বার’ শীর্ষক এক কনসার্টে। সেখানে রাজা চার্লসের সঙ্গে ছিলেন কুইন ক্যামিলা, প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটন সহ রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। রাজার ভাষণে উঠে আসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের রাতে তরুণী এলিজাবেথের আনন্দ-উচ্ছ্বাসের কথা। ১৯ বছর বয়সী এলিজাবেথ তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন, কিভাবে তিনি বোন মার্গারেটকে সঙ্গে নিয়ে সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে গিয়েছিলেন।
“সন্ধ্যায় আনন্দ উদযাপন করতে গিয়ে মা তাঁর ডায়েরিতে লিখেছিলেন, আমি তখন মাত্র ১৯ বছর বয়সি। তিনি পরিচয় গোপন করে মধ্য লন্ডনের রাস্তায় মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন। তিনি নাকি বহু মাইল হেঁটেছিলেন,” রাজা চার্লস তাঁর বক্তব্যে জানান।
পরের দিনের ডায়েরিতে লেখা ছিল, “আবার জনতা-ভীড়ে গিয়েছিলাম। এমব্যাঙ্কমেন্ট, পিক্যাডিলি—বৃষ্টি হওয়ায় লোক কম ছিল। একটি বাড়ির ভিতরে কঙ্গো নাচের মত করে প্রবেশ করলাম। ভোর ২টা পর্যন্ত গান গেয়েছি। ঘুমিয়েছি ভোর ৩টায়।” এই কথা শুনে প্রায় ১২ হাজার দর্শক হেসে উঠেন, আর প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্সেস কেটের মুখেও হাসি ফুটে ওঠে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে রাজা চার্লস মজা করে বলেন, “আমি আশা করি, আজকের রাতের উদযাপনও আপনাদের জন্য তেমনই আনন্দপূর্ণ হবে। তবে, আমার মনে হয় না, ভোর ২টা পর্যন্ত গান গাওয়ার মতো এনার্জি আমার আছে। এমনকি, এখান থেকে বাকিংহাম প্যালেস পর্যন্ত আপনাদের সঙ্গে কঙ্গো নাচে অংশ নেওয়াটাও আমার পক্ষে সম্ভব নয়!”
জানা যায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এলিজাবেথ ও তাঁর বোন মার্গারেট জনসাধারণের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে প্রাসাদ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। তাঁদের বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জের অনুমতিক্রমে তাঁরা গিয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন গ্রেনেডিয়ার গার্ড।
ভি ই ডে’র সেই রাতে তরুণী এলিজাবেথের আনন্দ-উচ্ছ্বাসের মুহূর্তগুলো যেন আজও অম্লান। ব্রিটেনের ইতিহাসে দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্যসূত্র: পিপল