বিখ্যাত চলচ্চিত্র “দ্য ক্যুরিয়াস কেস অফ বেঞ্জামিন বাটন”-এর গল্প এবার মঞ্চে, আর তাতেই বাজিমাত। লন্ডনের অ্যাম্বাসেডর্স থিয়েটারে (Ambassadors Theatre) সাফল্যের সঙ্গে চলছে জেথ্রো কম্পটন (Jethro Compton)-এর পরিচালনায় নতুন এই মিউজিক্যাল।
অলিভার অ্যাওয়ার্ডে (Olivier Awards) তিনটি পুরস্কার জিতে নিয়েছে এই প্রযোজনাটি। গল্প বলার অভিনবত্ব আর জীবনবোধের গভীরতার কারণে এটি দর্শক ও সমালোচক উভয়ের মন জয় করেছে।
এই মিউজিক্যালের কেন্দ্রে রয়েছে অভিনেতা-সংগীতশিল্পীদের (actor-musicians) এক অসাধারণ দল। গল্প বলার চিরাচরিত ধারার বাইরে গিয়ে, এখানে শিল্পীরা বাদ্যযন্ত্র বাজান এবং গান করেন, যা দর্শকদের এক ভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা দেয়।
গল্পের বিষয়বস্তু, বিপরীত দিকে বয়স বাড়তে থাকা এক ব্যক্তির জীবনযাত্রা। জন্মকালে বৃদ্ধ, আর তারপর ধীরে ধীরে তারুণ্যের দিকে ফেরা—এই প্রেক্ষাপটে জীবনের গভীরতা এবং ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
জেথ্রো কম্পটন এই মিউজিক্যালের লেখক, পরিচালক এবং মঞ্চ পরিকল্পনাকারী। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সুরকার ও গীতিকার ড্যারেন ক্লার্ক (Darren Clark)।
ক্লার্কের সঙ্গীত যেন এক চলমান সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো, যা কখনও শান্ত, কখনও উত্তাল—জীবনের এমনই নানা রূপ ফুটিয়ে তোলে।
এই মিউজিক্যালের প্রতিটি গানে জীবনের গভীরতা অনুভব করা যায়। এখানে আছে বিশালতা, আবার ক্ষুদ্র মুহূর্তের সৌন্দর্যও।”
বেঞ্জামিন বাটনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন জন ড্যাগলিশ (John Dagleish)। তাঁর অভিনয় যেন সময়ের বিপরীতে হেঁটে চলা এক মানুষের প্রতিচ্ছবি।
ক্লার ফস্টার (Clare Foster) অভিনয় করেছেন ইলোয়েন কিনের (Elowen Keene) চরিত্রে। এই চরিত্রটি বেঞ্জামিনের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক ফুটিয়ে তোলে। এছাড়াও, অভিনয়শিল্পী ফিলিপা হগ (Philippa Hogg) এই মিউজিক্যালে একজন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
পোশাক পরিকল্পনাকারী আনা কেলসি (Anna Kelsey)-এর কাজেও রয়েছে মুন্সিয়ানা। পোশাকের মাধ্যমে চরিত্র এবং গল্পের প্রেক্ষাপটকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যা দর্শকদের আকৃষ্ট করে।
আমরা চেয়েছিলাম মঞ্চের সেটটিকে সমুদ্রের মতো দেখাতে, যেন সবকিছু জলের গভীরে হারিয়ে যাচ্ছে।”
এই মিউজিক্যাল তৈরি হওয়ার পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘ প্রক্রিয়া। শুরুতে এটি ছোট পরিসরে মঞ্চস্থ করা হলেও, পরবর্তীতে এর ব্যাপকতা বাড়ে।
পরিচালক জেথ্রো কম্পটন জানিয়েছেন, এই ধরনের মিউজিক্যাল তৈরি করতে ঝুঁকি নিতে হয়, কারণ এতে প্রচুর অর্থ খরচ হয়।
মিউজিক্যালটিতে জীবনের নানা দিক, যেমন—ভালোবাসা, সম্পর্কের গভীরতা এবং মানুষের সীমাবদ্ধতা নিয়ে কথা বলা হয়েছে। যারা একবার এই মিউজিক্যালটি দেখেছেন, তাঁরা তাঁদের প্রিয়জনদের আরও বেশি ভালোবাসতে চেয়েছেন।
“দ্য ক্যুরিয়াস কেস অফ বেঞ্জামিন বাটন” মিউজিক্যালটি শুধু একটি বিনোদনমূলক পরিবেশনা নয়, বরং এটি জীবনের প্রতিচ্ছবি, যা দর্শকদের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত করে।
তথ্যসূত্র: The Guardian