**নারী শ্রমিকদের অধিকারের প্রতিচ্ছবি: পর্দায় লীলি লেডবেটারের জীবন ও বর্তমান প্রেক্ষাপট**
কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের সমান অধিকারের লড়াইয়ের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত লীলি লেডবেটার। তাঁর জীবন অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘লিলি’ মুক্তি পেতে যাচ্ছে, যা বর্তমানে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এই ছবিতে অভিনেত্রী প্যাট্রিসিয়া ক্লার্কসন লেডবেটারের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
ছবিটি মুক্তি পাওয়ার প্রেক্ষাপটও বেশ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি এমন এক সময়ে মুক্তি পাচ্ছে যখন বিশ্বে নারী অধিকার এবং শ্রমিক অধিকারের বিষয়টি নতুন করে গুরুত্ব পাচ্ছে।
লীলি লেডবেটার ছিলেন একজন সাধারণ নারী যিনি দীর্ঘদিন ধরে কর্মক্ষেত্রে বেতন বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন।
তাঁর পুরুষ সহকর্মীদের তুলনায় তিনি একই কাজ করে অনেক কম বেতন পেতেন।
এই বৈষম্যের বিরুদ্ধে তিনি লড়াই শুরু করেন এবং শেষ পর্যন্ত ‘লিলি লেডবেটার ফেয়ার পে অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন প্রণীত হয়, যা কর্মীদের বেতন বৈষম্যের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের সুযোগ করে দেয়।
ছবিতে লীলি লেডবেটারের চরিত্রে অভিনয় করা প্যাট্রিসিয়া ক্লার্কসন মনে করেন, এই ছবিটি বর্তমান সময়ের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক।
তিনি জানান, লীলি লেডবেটার কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন একজন সাধারণ নারী যিনি তাঁর অধিকারের জন্য লড়াই করেছিলেন।
ক্লার্কসন মনে করেন, এই ছবিটি মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেবে যে, সমাজে পরিবর্তন আনা সম্ভব।
অভিনেত্রী ক্লার্কসন এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানান, তিনি লীলি লেডবেটারের জীবন থেকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার জন্য তিনি তাঁর ভেতরের আবেগ ও উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়েছেন।
তিনি বলেন, “আমি চেয়েছিলাম লীলিকে একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করতে, যিনি প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন।
ছবিটির পরিচালক র্যাচেল ফেল্ডম্যানও মনে করেন, “লিলি” ছবিটি নারী শ্রমিকদের অধিকারের প্রতি সম্মান জানায় এবং তাঁদের সংগ্রামের প্রতি সমর্থন জোগায়।
ছবিটির মাধ্যমে দর্শকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেক্ষাপটে ছবিটির মুক্তি এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন সেখানকার রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
এই সময়ে, “লিলি” চলচ্চিত্রটি নারী অধিকার এবং শ্রমিক অধিকারের পক্ষে একটি শক্তিশালী বার্তা নিয়ে এসেছে।
এই ছবিতে লীলি লেডবেটারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্যাট্রিসিয়া ক্লার্কসন।
এছাড়াও, রুথ ব্যাডার গিন্সবার্গ, হিলারি ক্লিনটন, মিশেল ওবামা এবং বারাক ওবামার মতো খ্যাতিমান ব্যক্তিরা যারা একসময় লীলি লেডবেটারের এই লড়াইকে সমর্থন যুগিয়েছিলেন, তাঁদের ফুটেজও ছবিতে ব্যবহার করা হয়েছে।
লীলি লেডবেটারের জীবন আমাদের সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।
তাঁর সংগ্রাম প্রমাণ করে যে, দৃঢ় মানসিকতা এবং আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে যে কোনো প্রতিকূলতাকে জয় করা সম্ভব।
কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি এখনো অনেক দেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এই ছবিটি সেই সব নারীদের উৎসাহিত করবে যারা তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই করছেন।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস