যুক্তরাজ্যের ডার্লিংটন শহরে সম্প্রতি দুই ব্যক্তির মধ্যে হওয়া একটি আলোচনা বর্তমানে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাদের আলাপচারিতার মূল বিষয় ছিল রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা সত্ত্বেও কীভাবে কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়।
এই আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন লিয়ান, যিনি এক সময়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক এবং বর্তমানে একটি পরিবেশবান্ধব স্টার্টআপের প্রধান। অন্যদিকে, কার্ল ছিলেন সাবেক নৌ-সেনা এবং বর্তমানে সফটওয়্যার ডেভলপার হিসেবে কর্মরত। তাদের রাজনৈতিক আদর্শ ছিল ভিন্ন মেরুর—লিয়ান নিজেকে বাম-ঘেঁষা এবং কার্ল সাধারণত রক্ষণশীল হিসেবে পরিচয় দেন।
আলোচনার শুরুতে তারা বিবিসির লাইসেন্স ফি নিয়ে কথা বলেন। লিয়ানের মতে, বিবিসির দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষার জন্য একটি উপযুক্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা থাকা দরকার। তিনি মনে করেন, বিবিসি এমন কিছু অনুষ্ঠান তৈরি করে যা অন্য কোনো চ্যানেলে দেখা যায় না, যেমন ডেভিড অ্যাটেনবোরোর প্রকৃতি বিষয়ক ব্যয়বহুল তথ্যচিত্রগুলো।
কার্ল অবশ্য বিবিসি’র কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার মতে, এখন যেখানে বহু চ্যানেল দেখার সুযোগ রয়েছে, সেখানে বিবিসির মতো একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?
এরপর তারা জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর মোকাবিলা নিয়ে আলোচনা করেন। লিয়ান মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর প্রতিকারে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কার্লের মধ্যে কিছুটা সংশয় ছিল।
তিনি উল্লেখ করেন, চীন, আমেরিকা ও রাশিয়ার মতো দেশগুলো যখন এই বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে না, তখন তাদের একার চেষ্টা কতটা ফলপ্রসূ হবে।
আলোচনায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়েও কথা হয়। লিয়ান ট্রাম্পকে একজন বিপজ্জনক ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।
অন্যদিকে, কার্ল ট্রাম্পের কিছু সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন, বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের প্রতি আমেরিকার নির্ভরশীলতা কমানোর ক্ষেত্রে তার নেওয়া পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিন্নতা সত্ত্বেও, লিয়ান ও কার্ল উভয়েই স্বীকার করেন যে তাদের মধ্যে অনেক বিষয়ে মিল ছিল। তারা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং খোলামেলা আলোচনা করতে পেরেছেন।
তাদের মতে, ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের মানুষের মধ্যেও আলোচনা হতে পারে এবং বিভিন্ন বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব।
এই আলোচনার মাধ্যমে, ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার গুরুত্ব ফুটে উঠেছে। গণতান্ত্রিক সমাজে বিভিন্ন মতাদর্শের মানুষের মধ্যে আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে একটি সুস্থ পরিবেশ তৈরি হতে পারে এবং এর মাধ্যমে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান