ভুয়া বিলাসবহুল পণ্য: নামী দোকানেও মিলছে নকল!
বর্তমান ডিজিটাল যুগে অনলাইনে কেনাকাটার চাহিদা বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে জাল পণ্যের কারবার। নামী ব্র্যান্ডের মোড়কে গ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নকল পণ্য। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিশ্বজুড়ে বহু ক্রেতা নামী দোকান থেকে কেনা বিলাসবহুল পণ্যের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসের বাসিন্দা জোয়ান কিম নামের একজন নারী, যিনি অনলাইনে একটি প্রসিদ্ধ দোকান থেকে প্রায় ২,৬০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ২ লক্ষ ৮৬ হাজার বাংলাদেশি টাকা) মূল্যের একটি ‘দ্য রো’ ব্র্যান্ডের ব্যাগ কেনেন। ব্যাগটি হাতে পাওয়ার পর তিনি আসল এবং নকলের মধ্যেকার কিছু পার্থক্য নজরে আনেন। তাঁর মতে, ব্যাগের ভেতরের lining, সেলাই এবং অন্যান্য কিছু সূক্ষ্ম অংশে গড়মিল ছিল। বিষয়টি নিয়ে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যা দ্রুত ভাইরাল হয়।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই, একই অভিজ্ঞতার শিকার হন ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা টিফানি কিমও। তিনিও অনলাইনে কেনা একটি ‘দ্য রো’ ব্র্যান্ডের ব্যাগ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তাঁর মতে, ব্যাগের আকার, আকৃতি এবং উপাদানে কিছু অমিল ছিল। টিফানি জানান, ব্যাগটির দাম ছিল প্রায় ১,০০০ মার্কিন ডলার (প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার বাংলাদেশি টাকা)।
শুধু এই দুজনই নন, যুক্তরাজ্যেও ফ্লানেলস নামক একটি দোকানে কেনাকাটা করে প্রতারিত হয়েছেন অনেকে। তারা ভুয়া Saint Laurent-এর বেল্ট এবং Gucci-র স্যান্ডেলের মতো পণ্য পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরবরাহ শৃঙ্খলে জটিলতা এবং জালিয়াত চক্রের কারসাজির কারণে এমনটা ঘটছে। অনেক সময়, নামী দোকানগুলো সরাসরি ব্র্যান্ডের কাছ থেকে পণ্য না কিনে অন্য উৎস থেকে সংগ্রহ করে, যার ফলে নকল পণ্য প্রবেশের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এছাড়া, রিটার্ন পলিসির সুযোগ নিয়ে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী আসল পণ্যের বদলে নকল পণ্য ফেরত দিয়ে প্রতারণা করে।
এই পরিস্থিতিতে, অনলাইনে বিলাসবহুল পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের সচেতন হওয়া জরুরি। পণ্যের গুণগত মান, প্যাকেজিং এবং বিক্রেতার নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তবেই কেনাকাটা করা উচিত। এছাড়া, পরিচিত দোকান থেকে জিনিস কেনার সময়েও সতর্ক থাকতে হবে। কোনো পণ্যের গুণগত মান নিয়ে সন্দেহ হলে, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে সত্যতা যাচাই করা যেতে পারে।
ভবিষ্যতে, অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রতারণা রুখতে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। সেই সঙ্গে, গ্রাহকদের সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালানো দরকার, যাতে তাঁরা নকল পণ্য চিনে আসল পণ্য কিনতে পারেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন