নব্বই দশকের জনপ্রিয় হিপ-হপ শিল্পী দল সল্ট-এন-পেপা তাদের গানের স্বত্ব ফিরে পেতে আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন। এই বিখ্যাত নারী শিল্পী দ্বয় তাদের পুরনো গানের স্বত্ব নিজেদের কাছে ফিরিয়ে আনার জন্য ইউনিভার্সাল মিউজিক গ্রুপের (ইউএমজি) বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

তাদের জনপ্রিয় গান ‘পুশ ইট’-এর স্বত্বও এর অন্তর্ভুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের কপিরাইট আইন অনুযায়ী, শিল্পীরা তাদের গান প্রকাশের কয়েক দশক পর সেগুলোর স্বত্ব নিজেদের কাছে ফেরত পাওয়ার অধিকারী হন।

১৯৮৭ সালে ‘পুশ ইট’ গানটি প্রকাশের পর সল্ট-এন-পেপা তাদের গানের স্বত্ব ফিরে পেতে চুক্তির শর্তানুসারে ইউএমজি’র কাছে আবেদন করেন। কিন্তু ইউএমজি তাদের আবেদনে সাড়া দিতে রাজি হয়নি।

বরং, শোনা যাচ্ছে, তারা নাকি গানগুলো বিভিন্ন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম থেকে সরিয়ে নিয়েছে। মামলায় সল্ট-এন-পেপা অভিযোগ করেছেন, ইউএমজি’র এই পদক্ষেপ তাদের শিল্পী জীবনের ক্ষতি করছে এবং তাদের ভক্তদের গান শোনার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে।

তাদের মতে, ইউএমজি’র এমন আচরণ কপিরাইট আইনের লঙ্ঘন। জানা যায়, এই মামলায় ক্ষতিপূরণ বাবদ এক মিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যা প্রায় ১১ কোটি টাকার বেশি) দাবি করা হয়েছে।

সল্ট-এন-পেপার আইনজীবী জানিয়েছেন, তাদের ক্লায়েন্টরা তাদের গানের স্বত্ব ফিরে পেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তাদের মতে, ১৯৮৬ সালের তাদের প্রথম অ্যালবাম ‘হট, কুল অ্যান্ড ভিসিয়াস’ সহ অন্যান্য অনেক জনপ্রিয় গানের স্বত্ব তাদের প্রাপ্য।

১৯৯৩ সালের ‘ভেরি নেসেসারি’ অ্যালবামের ‘শুপ’ এবং ‘হোয়াট্টা ম্যান’-এর মতো গানগুলোর স্বত্বও তারা পেতে চান। সল্ট-এন-পেপা’র এই লড়াই শুধু তাদের নিজেদের অধিকারের বিষয় নয়, বরং এটি সঙ্গীত জগতে শিল্পী ও স্বত্বাধিকারীদের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক এবং অধিকারের বিষয়টি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

আশির দশকে কুইন্সে (নিউ ইয়র্ক) জন্ম নেওয়া এই শিল্পী দলটি নারী শিল্পী হিসেবে হিপ-হপ জগতে নিজেদের জায়গা তৈরি করেছে। তারা তাদের গানে নারীদের যৌনতা এবং ক্ষমতায়নের কথা তুলে ধরেছেন, যা সেই সময়ে ছিল বেশ সাহসী পদক্ষেপ।

১৯৯৫ সালে তারা প্রথম নারী র‍্যাপ শিল্পী দল হিসেবে গ্র্যামি পুরস্কার জেতেন। এছাড়াও, ২০২১ সালে তারা লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পান। খুব শীঘ্রই তাদের ‘রক অ্যান্ড রোল হল অফ ফেম’-এ অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

অন্যদিকে, ইউএমজি’র আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমাধানে আসতে চান। তবে তাদের মতে, ১৯৮৬ সালের চুক্তি অনুযায়ী সল্ট-এন-পেপা’র সঙ্গে তাদের যে চুক্তি হয়েছিল, তাতে গানের স্বত্বের বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

এখন দেখার বিষয়, এই মামলার রায় তাদের পক্ষে আসে কিনা। তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস