শিরোনাম: ব্রুস স্প্রিংস্টিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে বাদানুবাদ: শিল্পী বনাম প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের দ্বন্দ
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় রক সঙ্গীত শিল্পী ব্রুস স্প্রিংস্টিন এবং দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সম্প্রতি বাদানুবাদ সৃষ্টি হয়েছে। ম্যানচেস্টারে (ইংল্যান্ড) এক কনসার্টে স্প্রিংস্টিন ট্রাম্পের প্রশাসনকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত, অযোগ্য এবং দেশদ্রোহী’ বলে মন্তব্য করেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্প্রিংস্টিনকে ‘বুড়িয়ে যাওয়া রকস্টার’ হিসেবে উল্লেখ করেন এবং তাঁর কণ্ঠকে ‘চিৎকার’ এর সাথে তুলনা করেন।
গত সপ্তাহে, ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে কনসার্টে স্প্রিংস্টিন সরাসরি ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যে আমেরিকাকে ভালোবাসি, যে আমেরিকার কথা আমি আমার গানে লিখেছি, যা ২৫০ বছর ধরে আশা ও স্বাধীনতার প্রতীক ছিল, সেটি এখন দুর্নীতিগ্রস্ত, অযোগ্য এবং দেশদ্রোহী একটি প্রশাসনের হাতে বন্দী।’
এই মন্তব্যের পরেই বিতর্কের সূত্রপাত হয়।
ট্রাম্প সঙ্গে সঙ্গেই এর জবাব দেন। তিনি স্প্রিংস্টিনকে ‘অতিরঞ্জিত’ ও ‘অহংকারী’ আখ্যা দেন।
তিনি আরও বলেন, স্প্রিংস্টিনের গান তিনি পছন্দ করেন না এবং তাঁর রাজনৈতিক ideology বামপন্থী। এমনকি ট্রাম্প, কামালা হ্যারিসের নির্বাচনী প্রচারণায় স্প্রিংস্টিনের অংশগ্রহণের তদন্তের দাবি জানান।
রাজনৈতিক অঙ্গনে স্প্রিংস্টিনের সরব উপস্থিতি নতুন নয়। এর আগেও তিনি বিভিন্ন সময়ে রিপাবলিকান রাজনীতিবিদদের সমালোচনা করেছেন।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগান যখন স্প্রিংস্টিনের ‘বর্ন ইন দ্য ইউএসএ’ গানের মাধ্যমে দেওয়া ‘আশার বার্তা’র প্রশংসা করেছিলেন, তখন স্প্রিংস্টিন প্রশ্ন তুলেছিলেন, রেগান কি তাঁর গানের মূল বার্তাটি শুনেছেন?
অতীতে তিনি নিউ জার্সির প্রাক্তন গভর্নর ও রিপাবলিকান নেতা ক্রিস ক্রিস্টির সঙ্গেও দ্বন্দ্বে জড়িয়েছিলেন, যদিও ক্রিস্টি ছিলেন স্প্রিংস্টিনের গানের ভক্ত।
২০২০ সালের নির্বাচনে স্প্রিংস্টিন ডেমোক্রেটদের সমর্থন করেছিলেন এবং ট্রাম্পকে ‘ক্যুইন্সের একজন প্রতারক’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ম্যানহাটানে তাঁর নিজস্ব টাওয়ার তৈরি করেছেন এবং প্রায়শই নিউ জার্সির বেডমিনস্টারে তাঁর গলফ ক্লাবে সময় কাটান।
ট্রাম্প সাধারণত সেইসব সঙ্গীতশিল্পীদের আক্রমণ করেন, যারা তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলেন। এর আগে তিনি জনপ্রিয় শিল্পী বেয়ন্সে এবং টেইলর সুইফটেরও সমালোচনা করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্প্রিংস্টিনের অনুসারীদের মধ্যে রক্ষণশীল সমর্থকও রয়েছেন, তবে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর এই বিতর্কের প্রভাব কেমন হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
স্প্রিংস্টিন তাঁর কর্মজীবনে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। ১৯৯৫ সালের অ্যালবাম ‘দ্য ঘোস্ট অফ টম জোয়াড’-এ অভিবাসীদের দুর্দশা এবং ২০০১ সালের ‘আমেরিকান স্কিন (৪১ শটস)’ গানে পুলিশের গুলিতে এক নিরীহ কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের নিহত হওয়ার ঘটনা তুলে ধরে তিনি ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছিলেন।
বর্তমানে, স্প্রিংস্টিনের ইউরোপীয় সফরের সূচি নির্ধারিত আছে, তবে যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর কনসার্টের কোনো ঘোষণা এখনো আসেনি।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস