আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলো ছড়ানো এক নতুন নক্ষত্র, যিনি গানের জগৎকে দিয়েছেন এক ভিন্ন মাত্রা। তিনি হলেন শ্যাবুজি, নাইজেরীয় বংশোদ্ভূত এই সঙ্গীতশিল্পী সম্প্রতি তাঁর ব্যতিক্রমী গান “এ বার সং (টিপসি)” দিয়ে বিশ্বজুড়ে খ্যাতি লাভ করেছেন।

গানটি এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে, বিলবোর্ড হট ১০০-তে শীর্ষ চারে জায়গা করে নিয়েছে, যা একক শিল্পীর দীর্ঘ সময় ধরে এক নম্বরে থাকার রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

শ্যাবুজির সঙ্গীতের পথচলা মোটেও মসৃণ ছিল না। ছোটবেলায় তিনি ভার্জিনিয়ায় বেড়ে ওঠেন, যেখানে তাঁর বাবার অনুপ্রেরণায় কান্ট্রি সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ জন্মায়।

তাঁর বাবা ছিলেন আমেরিকান সঙ্গীতের অনুরাগী, বিশেষ করে কেনি রজার্স এবং ডলি পার্টনের মতো শিল্পীদের গান পছন্দ করতেন। বাবার কাছ থেকে তিনি কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্ব এবং নিজের প্রতি দায়বদ্ধতা শিখেছেন।

শ্যাবুজি বলেন, “আমার বাবা সবসময় বলতেন, নিজের ভালো নিজেকেই করতে হবে।” বাবার এই কথাগুলোই তাঁকে সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।

সংগীতের প্রতি ভালোবাসা তাঁর মধ্যে ধীরে ধীরে তৈরি হয়। প্রথমে, এটি তাঁর কাছে একটি শখের মতো ছিল, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গান তৈরি করাটাই তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়।

শুরুতে, তিনি কিছুটা দিশাহীন ছিলেন, কারণ তাঁর অনেক পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু সেগুলোকে কিভাবে কাজে লাগাবেন, সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না। তাঁর প্রথম দিকের কাজগুলোতে হিপ-হপ এবং ট্র্যাপের প্রভাব ছিল।

২০২৪ সালে প্রকাশিত তাঁর তৃতীয় অ্যালবাম, “হোয়্যার আই’ভ বিন, ইজন্ট হোয়্যার আই’ম গোয়িং”-এর মাধ্যমে তিনি তাঁর সঙ্গীতযাত্রায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন। এই অ্যালবামে হিপ-হপ, সাউদার্ন রক এবং আমেরিকান ঘরানার সঙ্গীতের মিশ্রণ ছিল, যা শ্রোতাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে।

শ্যাবুজি বলেন, “আমি সবসময় চেয়েছি এমন সঙ্গীত তৈরি করতে যা আমার ভেতরের মানুষকে প্রকাশ করে।”

“এ বার সং (টিপসি)” গানটির সাফল্যের পেছনে ছিল তাঁর সরল চিন্তা। প্রথমে, তিনি সবকিছুকে খুব জটিল করে তৈরি করতে চাইতেন, কিন্তু পরে তিনি বুঝতে পারেন, মাঝে মাঝে সাদাসিধে থাকাই সেরা।

তাঁর ম্যানেজার তাঁকে বলেছিলেন, “সবকিছুকে এত পরিকল্পিত করার দরকার নেই। মাঝে মাঝে শুধু তুমি হও।”

শ্যাবুজির এই সাফল্য শুধু গান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নেই। তিনি ২০২৩ সালের মেট গালা-তে আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন, এবং জনপ্রিয় শিল্পী বেয়ন্সের “কাউবয় কার্টার” অ্যালবামেও কাজ করার সুযোগ পান।

এছাড়াও, কোচেলা এবং গ্ল্যাস্টনবেরির মতো জনপ্রিয় উৎসবে তিনি পারফর্ম করেছেন। আগামী দিনগুলোতেও তিনি আরও নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখেন।

তিনি চান এমন গান তৈরি করতে যা সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পরিচিত হবে।

শ্যাবুজি মনে করেন, একজন শিল্পী হিসেবে অনুপ্রেরণা ধরে রাখাটা খুব জরুরি। তাঁর মতে, “যদি আপনি অনুপ্রাণিত থাকেন, তবে আপনি এমন কিছু তৈরি করতে পারেন যা আপনার জীবন বদলে দেবে।”

বর্তমানে তিনি তাঁর প্রথম হেডলাইনিং ট্যুরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা এই বছরের শরৎকালে শুরু হবে।

তথ্যসূত্র: পিপল