মার্কিন সঙ্গীতশিল্পী শ্যন ‘ডিডি’ কম্বসের বিরুদ্ধে ওঠা মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছে। আদালতের ভেতরের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করার অনুমতি না থাকায়, বিচার চলাকালীন সময়ের চিত্র ফুটিয়ে তুলতে আদালতে চিত্রশিল্পীদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
তবে এই ছবিগুলো নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা সংবাদ মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
আদালতের ভেতরের চিত্রকর্মগুলো নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ এই ছবিগুলোকে কার্টুন চিত্রের মতো বলছেন।
আবার অনেকে মনে করেন, বিচার প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা দিতে এইসব ছবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আদালতের চিত্রকর হিসেবে কাজ করা শিল্পীরা মনে করেন, তাদের কাজ নিছক শিল্পকর্ম নয়, বরং সাংবাদিকতার একটি রূপ।
আর্ট লিয়েন নামের একজন চিত্রশিল্পী, যিনি ১৯৭০ এর দশক থেকে এই পেশায় জড়িত, সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, “কখনও কখনও আমরা ভালো ছবি আঁকতে পারি না।
কারণ, সবসময় অনুকূল পরিবেশ থাকে না। আবার, অনেক সময় দক্ষ চিত্রশিল্পীরও অভাব হয়।”
তিনি আরও জানান, তার কর্মজীবনের শুরুতে একবার খারাপ ছবি আঁকার জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছিলেন। পরে অবশ্য তাকে আবার কাজে নেওয়া হয়।
লিয়েন বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার বিচার প্রক্রিয়াতেও ছবি এঁকেছেন।
এর মধ্যে রয়েছে ওকলাহোমা সিটি বোমা হামলার মামলা এবং ২০১৩ সালের বোস্টন ম্যারাথন বোমা হামলার ঘটনা।
এই ছবিগুলো অনেক সময় সমালোচনার শিকার হয়েছে। তিনি জানান, ডিডিকে নিয়ে আঁকা ছবিগুলো নিয়েও অনেকে বিরূপ মন্তব্য করেছেন।
আরেক চিত্রশিল্পী, সেড্রিক হোনস্টাড মনে করেন, আদালতের ছবি তোলার অনুমতি দেওয়া উচিত।
এর ফলে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা বাড়ে এবং জনগণের মধ্যে বিচার বিভাগের প্রতি আস্থা বাড়ে।
তবে তিনি এও মনে করেন, ক্যামেরার কারণে অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়।
তিনি বলেন, “ক্যামেরা সাধারণত সেই বিষয়গুলোর ওপর বেশি আলোকপাত করে যা নাটকীয়, কিন্তু সবসময় তা বিচারের মূল বিষয়গুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত নাও হতে পারে।”
ক্রিস্টিন কর্নেল নামের একজন চিত্রশিল্পী সিএনএনের হয়ে ডিডির মামলার ছবি আঁকছেন। তিনি জানান, সামাজিক মাধ্যমে তার কাজের সমালোচনা হলেও, তিনি তাতে খুব একটা গুরুত্ব দেন না।
ডিডির মা তার কাজের প্রশংসা করেছেন বলেও জানান তিনি।
কর্নেল এর আগে টম ব্র্যাডির ‘ডিফ্লেটগেট’ মামলা এবং কুখ্যাত গ্যাংস্টার জন গত্তির মামলারও ছবি এঁকেছেন।
আদালতের ভেতরের চিত্রশিল্পীরা জানান, তাদের কাজের জন্য ভালো ভিউয়িং পয়েন্ট বা দেখার সুযোগ পাওয়াটা খুব জরুরি।
এছাড়াও, দ্রুতগতির বিচার প্রক্রিয়ার ছবি আঁকা কঠিন হয়ে পড়ে।
হোনস্টাড জোর দিয়ে বলেন, চিত্রশিল্পীরা সেখানে উপস্থিত থাকতে না পারা মানুষদের হয়ে কাজ করেন।
তারা চেষ্টা করেন, ঘটনার সঠিক চিত্র তুলে ধরতে, যা সম্ভবত গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অনেক সময় নীরসও হতে পারে।
তথ্য সূত্র: CNN