যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপর ভয়ানক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। কাঠফাটা রোদে ‘বেয়ার ক্রল’ নামক এক ধরনের ব্যায়াম করতে বাধ্য করার কারণে কয়েকজন শিক্ষার্থীর মারাত্মকভাবে ঝলসে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এবং ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে উডভিল মিডল স্কুলে খেলাধুলার একটি ক্লাসে এই ঘটনা ঘটে। ক্লাসের শিক্ষক নাকি শিক্ষার্থীদেরকে গরম ট্র্যাকের উপর ‘বেয়ার ক্রল’ করতে অথবা তাদের সাধারণ ব্যায়াম চালিয়ে যেতে বলেন। জানা গেছে, শিক্ষার্থীরা গরম ট্র্যাকের উপর ‘বেয়ার ক্রল’ করার চ্যালেঞ্জটি বেছে নেয়।
সেই সময় ট্র্যাকের তাপমাত্রা ছিল ১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কয়েকজন শিক্ষার্থীর শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে এবং গুরুতর আহত কয়েকজনকে টেক্সাসের গ্যালভিস্টনের একটি বিশেষ বার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, ছাত্রদের ‘শক্তিশালী’ বানানোর জন্য নাকি শিক্ষক এমনটা করতে বলেছিলেন। এমনকি, যারা এই ব্যায়াম করতে পারছিল না, তাদের নিয়ে শিক্ষক উপহাসও করতেন। এক শিক্ষার্থীর মা জানান, তার দুই ছেলের শরীরের পোড়া ক্ষত দেখে তারা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘ছেলেদেরকে বিদ্যালয়ে নিরাপদ রাখার কথা, সেখানে এমন নির্যাতন কিভাবে হতে পারে?’
ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষককে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং তাকে আর বিদ্যালয়ে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। উডভিল ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্কুল ডিস্ট্রিক্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে, সে বিষয়ে তারা সতর্ক থাকবেন। একইসঙ্গে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা তাদের প্রধান অগ্রাধিকার বলেও জানানো হয়েছে।
উডভিল পুলিশ বিভাগ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তারা আহত ছাত্রদের চিকিৎসার কাগজপত্র সংগ্রহ করছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলছে। পুলিশের প্রধান জানিয়েছেন, তারা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন এবং জেলা অ্যাটর্নি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন যে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে কিনা।
এরই মধ্যে, টেক্সাস ডিপার্টমেন্ট অফ ফ্যামিলি অ্যান্ড প্রোটেক্টিভ সার্ভিসেসও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই ঘটনায় সেখানকার শিক্ষা ব্যবস্থায় শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
তথ্য সূত্র: পিপল