বিয়ে বাতিল করে পালিয়ে যেতে চাওয়ায় স্বামীর সঙ্গে মতবিরোধ, নববধূ কি ভুল করছেন?
নিউ ইয়র্কের ২৬ বছর বয়সী এক তরুণীর বিয়ের পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। সম্প্রতি তিনি তার বিপুল অর্থ খরচ করে আয়োজিত বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করে দ্রুত বিয়ে সারতে বা ইউরোপে একটি ছোট আকারের অনুষ্ঠান করতে চাচ্ছেন।
কিন্তু হবু স্বামীর আপত্তির কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। ঘটনাটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনার বিষয়।
আসলে, বিয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পরেই ওই তরুণী প্রথমে একটি বড়সড় অনুষ্ঠানের ব্যাপারে রাজি ছিলেন। কিন্তু এক মাস পরেই যখন তিনি একটি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান, তখন তার ভাবনাচিন্তার পরিবর্তন হয়।
তিনি বুঝতে পারেন, এত বড় একটি বিয়ের আয়োজন করা হলে পড়াশোনার খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। তাই তিনি এখন চাচ্ছেন, বিয়ের বিপুল পরিমাণ অর্থ বাঁচিয়ে তা তার মেডিকেল কলেজের বেতন এবং অন্যান্য খরচ মেটাতে কাজে লাগাতে।
তরুণীর মতে, ৪০ থেকে ৭০ হাজার ডলার খরচ করে এখানে অনুষ্ঠান করার চেয়ে বরং ৭ হাজার ডলারে ইউরোপে একটি সুন্দর অনুষ্ঠান করা যেতে পারে। এতে তার এবং হবু স্বামীর ভবিষ্যতের জন্য কিছু অর্থ সঞ্চয় করা সম্ভব হবে।
যা মেডিকেল কলেজের খরচ এবং বাড়ির অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য ব্যবহার করা যাবে।
কিন্তু কনেপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে রাজি নন বর। তার মতে, এমনটা হলে তার মায়ের স্বপ্ন পূরণ হবে না। বর জানান, তার মায়ের স্বপ্ন ছিল, ছেলের একটি বড়সড় অনুষ্ঠান হবে।
যদিও বরের মা বিয়ের খরচের মাত্র ১০ শতাংশ দিতে রাজি হয়েছেন, কনে জানান, বিয়ের জন্য এত টাকা খরচ করার কোনো মানে হয় না, বিশেষ করে যখন তিনি জানেন যে এই মুহূর্তে তার পড়াশোনার জন্য অর্থের প্রয়োজন।
কনে তার হবু স্বামীকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তবে তিনি তার সিদ্ধান্তে অনড়। তিনি বলেন, “আমি বুঝতে পারছি, কিন্তু আমি একজন ডাক্তার হওয়ার সুযোগ হারাতে চাই না, শুধুমাত্র ২০০ জন মানুষের জন্য একটি রাতের খাবারের আয়োজন করার জন্য।”
স্বামীর মতে, এটা “স্বার্থপরতা”। তিনি একটি ছোট আকারের বিয়ের প্রস্তাব দেন, তবে কনের মতে, সেই প্রস্তাবও তার জন্য যথেষ্ট ছোট নয়।
বরের “ছোট” বিয়ের ধারণায় তার পক্ষের প্রায় ৯০ জন অতিথি থাকবেন, যা এখনো অনেক বেশি খরচ সাপেক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে ওই তরুণী অনলাইন মাধ্যমে তার দ্বিধা প্রকাশ করেছেন। তার প্রশ্ন, তিনি কি ভুল করছেন? তিনি আরও জানান, মেডিকেল কলেজ থেকে তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়ারও একটি সুযোগ রয়েছে, কারণ তার ইতোমধ্যে একটি পেশা আছে।
তবে তিনি মনে করেন, এমনটা করা “ঠিক হবে না”।
বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা চলছে। যেখানে অনেকেই কনেকে তার ভবিষ্যৎ এবং আর্থিক দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
কারো কারো মতে, এমন একজন মানুষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া উচিত নয়, যিনি তার ক্যারিয়ারের থেকে নিজের মায়ের ইচ্ছাকে বেশি গুরুত্ব দেন।
আর্থিক চাপ এবং পারিবারিক প্রত্যাশার মধ্যে এই তরুণীর সিদ্ধান্ত এখন অনেকের কাছেই আলোচনার বিষয়।
তথ্য সূত্র: পিপল