শিরোনাম: নিজের অপহরণের নাটক সাজানোর পর, প্রাক্তন প্রেমিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলছেন মার্কিন নারী।
ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা শেররি পাপিনি নামের এক নারীর অপহরণের চাঞ্চল্যকর ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। ২০১৬ সালে তিনি যখন জগার সময় নিখোঁজ হন, তখন তিনি দাবি করেছিলেন যে, দুই হিস্পানিক নারী তাকে অপহরণ করেছে।
তবে পরে তিনি স্বীকার করেন যে, এটি ছিল সাজানো একটি ঘটনা। কিন্তু বর্তমানে তিনি তার প্রাক্তন প্রেমিক জেমস রেইসের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ এনেছেন। এই ঘটনা আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার রেড্ডিং শহরে জগার সময় শেররি পাপিনি নামে এক নারী নিখোঁজ হন। তার স্বামী কেইথ পাপিনি দ্রুত পুলিশে খবর দেন।
এরপর ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পরে, ঘটনার ২২ দিন পর তিনি রেডডিং থেকে প্রায় ২৪১ কিলোমিটার দূরে একটি মহাসড়কের পাশে ফিরে আসেন।
ফিরে আসার পর পাপিনি জানান, দুই মুখোশধারী হিস্পানিক নারী তাকে অপহরণ করে নির্যাতন করেছে। তার শরীরে ছিল ক্ষত, পোড়া ও চামড়ার বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন। এমনকি তার কোমর একটি শিকল দিয়ে বাঁধা ছিল।
তবে তদন্তের পর জানা যায়, পুরো ঘটনাটি সাজানো ছিল। এরপর তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি আসলে রেইসের সঙ্গে কোস্টা মেসায় ছিলেন।
মিথ্যা বলার অভিযোগে পাপিনিকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে তিনি ১০ মাস কারাভোগের পর মুক্তি পান। একইসঙ্গে, আইন প্রয়োগকারী বিভিন্ন সংস্থাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩ লক্ষ মার্কিন ডলারের বেশি পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ৩ কোটি ২৯ লক্ষ টাকার সমান।
সম্প্রতি, ‘শেররি পাপিনি: কট ইন দ্য লাই’ শিরোনামের একটি তথ্যচিত্রে (ডকুমেন্টারি) তিনি দাবি করেছেন, তিনি আসলে রেইসের সঙ্গে সম্পর্কের কথা গোপন করার জন্য অপহরণের গল্প তৈরি করেছিলেন।
কারণ, তিনি ভয় পাচ্ছিলেন যদি তার স্বামী এই সম্পর্কের কথা জানতে পারেন, তবে তিনি তাকে সবকিছু থেকে বঞ্চিত করবেন।
পাপিনি আরও দাবি করেন, ঘটনার আগের বছর ধরে তিনি রেইসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তবে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক ছিল না। পাপিনির মতে, জেমস ছিলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি তাকে শুনেছেন এবং তার কথা বুঝতে চেষ্টা করেছেন।
ডকুমেন্টারিতে পাপিনি আরও বলেন, রেইস তাকে অপহরণ করেছিলেন, যখন তিনি তাকে রেডডিংয়ে আসতে বলেছিলেন। কারণ, তিনি রেইসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে চেয়েছিলেন।
আমি অপহরণের শিকার হয়েছিলাম। আমি গাড়ির পেছনের সিটে অল্প সময়ের জন্য জেগে উঠেছিলাম, কিন্তু চোখ মেলতে পারিনি। এরপর যখন জেগে উঠি, তখন তিনি আমাকে গাড়ি থেকে নামাচ্ছিলেন। চারিদিক অন্ধকার ছিল। তিনি আমাকে হাঁটতে সাহায্য করার জন্য আমার হাত ধরেছিলেন। আমি শুধু ভেবেছিলাম, ‘এখানে আমার থাকার কথা নয়। আমার বাচ্চাদের ডে কেয়ার থেকে নিয়ে আসার কথা। আমি এখানে কেন?’ আমার শরীরে যে আঘাতগুলো ছিল—উরুতে কামড়ের দাগ, পিঠে আঘাতের চিহ্ন, চামড়ার পোড়া—আমি বলছি, এখানে আমার কোনো সম্মতি ছিল না।”
অন্যদিকে, রেইস জানিয়েছেন, পাপিনি সবকিছু পরিকল্পনা করেছিলেন। এমনকি তার কাঁধে লোহার গরম রড দিয়ে দাগ কাটার সিদ্ধান্তও পাপিনির ছিল। রেইস আরও বলেন, “আমি তাকে অপহরণ করিনি। তিনি ছিলেন একজন বন্ধু, যিনি সাহায্যের জন্য এসেছিলেন। তিনি তার স্বামীর কাছ থেকে পালাতে চাচ্ছিলেন।”
বর্তমানে, রেইস পাপিনির এই অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। ‘শেররি পাপিনি: কট ইন দ্য লাই’ তথ্যচিত্রটি সম্ভবত ২৬ ও ২৭ মে তারিখে প্রচারিত হবে।
তথ্য সূত্র: পিপলস