বর্ষাকালে বাংলাদেশে নদ-নদী, খাল-বিল পানিতে ভরে ওঠে। চারপাশে থাকে অথৈ জলরাশি, যা শিশুদের জন্য এক মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। অসাবধানতাবশত পানিতে ডুবে যাওয়া শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ।
সম্প্রতি, আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পানিতে ডুবে যাওয়া প্রতিরোধে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC) -এর তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকাতে প্রতি বছর প্রায় ৪ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়। এর মধ্যে ১ থেকে ৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো পানিতে ডুবে যাওয়া।
যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এখনো সেভাবে পাওয়া যায় না, তবে আমাদের দেশেও শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা প্রায়ই শোনা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়া রোধ করতে বাবা-মায়ের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। শিশুদের কাছাকাছি সময়ে কোনো জলাশয় থাকলে তাদের প্রতি মুহূর্তে নজর রাখা উচিত।
এমনকি সাঁতার জানা থাকলেও, কোনো শিশুকে একা পানিতে নামতে দেওয়া উচিত না।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী, শিশুদের সাঁতার শেখানোটা জরুরি। সাঁতার শেখার ফলে শিশুরা পানির বিপদ সম্পর্কে সচেতন হতে পারে এবং কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনার শিকার হলে নিজেকে রক্ষা করতে শিখতে পারে।
সাঁতার কাটার প্রশিক্ষণ শিশুদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং তাদের জীবন রক্ষার কৌশল শেখায়।
বাড়ির আশেপাশে পুকুর বা অন্য কোনো জলাশয় থাকলে, তার চারপাশে বেড়া দেওয়া উচিত। বেড়া এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন শিশুরা সহজে সেটি ডিঙিয়ে যেতে না পারে।
এছাড়াও, শিশুদের সাঁতারে আগ্রহী করতে পারেন এবং তাদের নিয়ে সাঁতার কাটতে যাওয়া যেতে পারে।
শিশুদের পাশাপাশি অভিভাবকদেরও সাঁতার শেখা উচিত। এতে করে তারা শিশুদের ভালোমতো দেখাশোনা করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে তাদের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবেন।
সাঁতার কাটার পাশাপাশি, পানিতে ডুবে যাওয়া ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কেও জ্ঞান রাখা দরকার। যেমন, CPR (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) সম্পর্কে ধারণা থাকলে, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।
সবশেষে, মনে রাখতে হবে, পানিতে ডুবে যাওয়া প্রতিরোধে সচেতনতাই সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। পরিবারের সকলে যদি একটু সচেতন হয়, তবে শিশুদের পানিতে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
তথ্যসূত্র: সিএনএন