চীনের একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ফলে অন্তত পাঁচ জন নিহত হয়েছেন এবং এখনো ছয় জন নিখোঁজ রয়েছেন। চীনের গণমাধ্যম এবং আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার, চীনের শানডং প্রদেশের ওয়েইফাং শহরে অবস্থিত একটি কারখানায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাওমি শানডং ইউদাও কেমিক্যাল কোং লিমিটেড নামক একটি কীটনাশক ও ঔষধ প্রস্তুতকারক কারখানায় এই বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায় এবং বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উড়তে দেখা যায়।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আহত হয়েছেন ১৯ জন, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
বিস্ফোরণের কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে, চীনের জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা রাসায়নিক শিল্পে ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য একটি কর্মশালা আয়োজন করেছিল।
এছাড়াও, জানা গেছে, গেল বছর কোম্পানিটিকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু দুর্বলতার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং কিভাবে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিস্ফোরণের ফলে কারখানার কাছাকাছি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় একটি রেস্টুরেন্টের মালিক জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল ভূমিকম্পের মতো।
এমনকি, কারখানা থেকে প্রায় দুই মাইল দূরে অবস্থিত একটি রেস্টুরেন্টেরও সামান্য ক্ষতি হয়েছে।
দুর্ঘটনার শিকার হওয়া এক বাসিন্দা, লিউ মিং জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে তারা সবকিছু হারিয়েছেন। তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষ আমাদের হোটেলে থাকতে বলেছে।
কয়েক দিন থাকা যেতে পারে, কিন্তু আমাদের কী হবে? আমাদের তো কোনো জমি নেই, কিছুই নেই।”
স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাস্ক পরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনার ভয়াবহতা এতটাই তীব্র ছিল যে, বিস্ফোরণের স্থান থেকে আধ মাইলের বেশি দূরের স্কুলের শিক্ষার্থীরাও এর প্রভাব থেকে রেহাই পায়নি।
সেখানকার একজন শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তারা আকাশজুড়ে হলুদ রঙের ধোঁয়া দেখতে পেয়েছেন, যার মধ্যে লাল আভা ছিল এবং একটা অদ্ভুত গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল।
এই ঘটনা বাংলাদেশের শিল্পখাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার গুরুত্বের বিষয়টি নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়, সে জন্য শিল্প-কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা মান আরও কঠোর করা জরুরি।
তথ্যসূত্র: পিপল