শিরোনাম: লন্ডনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী: সৌন্দর্য, আত্মপরিচয় এবং পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি
লন্ডনের ‘অটোগ্রাফ’ গ্যালারিতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দুটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী, শিল্পী আইলিন পেরিয়ার ‘এ থাউজেন্ড স্মল স্টোরিজ’ এবং ডায়ান মিনিকুচ্চির ‘বিলংগিং এন্ড বিয়ন্ড’, বর্তমানে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ছবি তোলার মাধ্যমে কিভাবে সৌন্দর্য, আত্মপরিচয় এবং সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা যায়, এই প্রদর্শনী তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
আইলিন পেরিয়ারের কাজ মূলত সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের প্রতিকৃতি নিয়ে গঠিত। নব্বইয়ের দশক থেকে তিনি এই কাজ শুরু করেন। লন্ডনের ব্রিক্সটন ও পেকহ্যামের রাস্তা থেকে শুরু করে প্যারিসের মেট্রো স্টেশন কিংবা স্থানীয় সেলুন—বিভিন্ন স্থানে স্টুডিও তৈরি করে সাধারণ মানুষের ছবি তুলেছেন তিনি। পেরিয়ারের ক্যামেরায় ধরা পরেছে মানুষের জীবনের সাধারণ মুহূর্তগুলো, যা সৌন্দর্যের এক ভিন্ন সংজ্ঞা তৈরি করে। তিনি প্রচলিত সৌন্দর্যের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন, যা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
অন্যদিকে, ডায়ান মিনিকুচ্চি তাঁর ‘বিলংগিং এন্ড বিয়ন্ড’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে আত্ম-প্রতিকৃতির মাধ্যমে নিজের ভেতরের দ্বন্দ্বকে তুলে ধরেছেন। শ্বেতাঙ্গ সৌন্দর্যের ধারণার প্রভাব কীভাবে একজন নারীর আত্ম-পরিচয়ের উপর প্রভাব ফেলে, সে বিষয়ে আলোকপাত করেছেন তিনি। মিনিকুচ্চি তাঁর শিক্ষকতা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছবি তোলার মাধ্যমে এই কাজটি করেছেন। তাঁর ছবিতে নিজেকে আবিষ্কারের এক গভীর চেষ্টা ফুটে উঠেছে, যা দর্শকদের মনে গভীর রেখাপাত করে।
উভয় শিল্পীই তাঁদের কাজে আলোকচিত্রের মাধ্যমে সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন। পেরিয়ারের ছবিতে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের প্রতিচ্ছবি দেখা যায়, যেখানে সৌন্দর্য কোনো নির্দিষ্ট ধারণায় সীমাবদ্ধ নয়। অন্যদিকে, মিনিকুচ্চি নিজের আত্ম-অনুসন্ধানের মাধ্যমে একজন নারীর আত্ম-পরিচয়ের জটিলতা তুলে ধরেছেন। এই দুটি প্রদর্শনী শুধু ছবি নয়, বরং সমাজের প্রতিচ্ছবি, যা দর্শকদের নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করে।
এই প্রদর্শনীগুলো, বিশেষ করে বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য, একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। আমাদের সমাজে সৌন্দর্যের ধারণা এবং আত্ম-পরিচয় নিয়ে যে প্রচলিত ধারণা রয়েছে, তার বাইরে গিয়ে নতুন করে চিন্তা করার সুযোগ তৈরি করে এই প্রদর্শনী। প্রতিকৃতি এবং আত্ম-প্রতিকৃতির মাধ্যমে শিল্পীরা দেখিয়েছেন, কিভাবে ছবি তোলার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা যায় এবং পরিবর্তন আনা যায়।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান