ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক আলোচিত ঘটনা হলো টড এবং জুলি ক্রিসলি দম্পতির কারাদণ্ড ও পরবর্তীতে তাদের ক্ষমা। এই দম্পতি, যারা তাদের রিয়েলিটি শো ‘ক্রিসলি নোজ বেস্ট’-এর মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছিলেন, তারা ব্যাংক জালিয়াতি এবং কর ফাঁকির অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন।
২০২২ সালে তাদের কারাদণ্ডের রায় হয়, যা অনেকের কাছেই অপ্রত্যাশিত ছিল। তবে, তাদের মুক্তি পাওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের মেয়ে সাভানা ক্রিসলি এবং অ্যালিস জনসন নামের একজন নারী, যিনিও একসময় কারাবন্দী ছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে মুক্তি পান।
সাভানা ক্রিসলি তার বাবা-মায়ের মুক্তির জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যান। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং নিজের পডকাস্টের মাধ্যমে তাদের মামলার বিষয়ে জনমত তৈরি করেন। কারাগারে তাদের অবস্থার বিষয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এমনকি থ্যাঙ্কসগিভিংয়ের মতো উৎসবের দিনেও তিনি তার বাবা-মায়ের জন্য মুক্তির আকুলতা প্রকাশ করেন।
২০১৮ সালে কিম কার্দাশিয়ানের সহায়তায় মাদক মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অ্যালিস জনসনের সাজা ট্রাম্প কমিয়ে দেন। পরবর্তীতে, তিনি ট্রাম্পের ‘ক্ষমা বিষয়ক উপদেষ্টা’ হিসেবে পরিচিত হন।
সাভানার এই মুক্তি আন্দোলনে অ্যালিস জনসনও সমর্থন জুগিয়েছেন। জানা যায়, ট্রাম্প যখন সাভানার সাথে কথা বলেন এবং তার বাবা-মাকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্তের কথা জানান, তখন অ্যালিস জনসন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
টড ক্রিসলিকে পেনসাকোলা, ফ্লোরিডার একটি ফেডারেল কারাগারে এবং জুলি ক্রিসলিকে কেনটাকি রাজ্যের লেক্সিংটনের একটি ফেডারেল মেডিকেল সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। টডকে ১২ বছর এবং জুলি ক্রিসলিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
যদিও তাদের আপিল সফল হয়নি, তবুও সাভানা হাল ছাড়েননি। তিনি ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছিলেন এবং বিভিন্ন ফোরামে তার বাবা-মায়ের মুক্তির আবেদন জানান।
ক্রিসলি দম্পতি ১৯৯৬ সাল থেকে বিবাহিত। তাদের বিরুদ্ধে ৩০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি জালিয়াতির অভিযোগ ছিল, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩৩০ কোটি টাকার সমান।
তাদের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা বা আইআরএস-কে (IRS) প্রতারিত করারও অভিযোগ ছিল। এই দম্পতি তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সাভানা ক্রিসলি তার বাবা-মায়ের মুক্তি পাওয়ার পরেও বিচার ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।