মহাকাশ জয়: এক নতুন স্বপ্নে বিভোর শিল্পী, যিনি ভাঙতে চান পুরনো ধ্যান-ধারণা
নিলি বেন হায়াউন-স্টেপ্যানিয়ান, যিনি একইসঙ্গে শিল্পী, অ্যাক্টিভিস্ট এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা—তাঁর কাজ সবসময়ই প্রচলিত ধারণার বাইরে।
মহাকাশ অনুসন্ধানের চিরাচরিত ধ্যান-ধারণাকে প্রশ্ন করে তিনি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন।
তাঁর নির্মিত নতুন ছবি ‘ডোপেলগ্যাঞ্জার্স³’ (Doppelgängers³) -এর বিষয়বস্তুও তেমনই।
ছবিটি মূলত বিলিয়নেয়ারদের মহাকাশ জয় এবং সেই দৌড়ের পেছনের গল্প নিয়ে নির্মিত।
বেন হায়াউন-স্টেপ্যানিয়ানের ছবিতে দেখা যায়, এলন মাস্ক এবং জেফ বেজোসের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিরা কীভাবে মহাকাশকে নিজেদের ব্যবসার ক্ষেত্র হিসেবে দেখছেন।
তাঁদের এই দৃষ্টিভঙ্গিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তিনি ভিন্ন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখান, যেখানে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি সমাজ গঠিত হবে।
তাঁর ছবিতে লিঙ্গবৈষম্য এবং একচেটিয়া আধিপত্যের পরিবর্তে নতুন এক পৃথিবীর চিত্র ফুটে উঠেছে।
এই চলচ্চিত্রের ধারণা তৈরি হয়েছে কিছুটা ভিন্ন পথে।
বেন হায়াউন-স্টেপ্যানিয়ান তাঁর ছবিতে পৃথিবীর মতোই একটি মহাকাশ মিশনের প্রস্তুতি দেখিয়েছেন।
যেখানে তিনি দুই ‘ডোপেলগ্যাঞ্জার’-কে (অবিকল দেখতে একই রকম তিনজন) সঙ্গে নিয়ে স্পেনের একটি গুহায় যান, যা মহাকাশ ভ্রমণের একটি সিমুলেশন হিসেবে কাজ করে।
এই মিশনের মাধ্যমে তিনি আন্তঃপ্রজন্মগত আঘাত এবং ঔপনিবেশিক মানসিকতার মতো বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
বেন হায়াউন-স্টেপ্যানিয়ান শুধু চলচ্চিত্র নির্মাণেই সীমাবদ্ধ নন।
নাসা-র ‘ইন্টারন্যাশনাল স্পেস অর্কেস্ট্রা’ গঠনেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
এছাড়াও তিনি ‘ইউনিভার্সিটি অফ দ্য আন্ডারগ্রাউন্ড’-এর মতো ব্যতিক্রমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত।
এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নাইটক্লাবের বেসমেন্টে চলে এবং এখানে কোনো টিউশন ফি লাগে না।
তাঁর কাজের বহুমুখিতা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
তাঁর ছবিতে তিনি সবসময়ই সমাজের প্রচলিত ক্ষমতা কাঠামোকে প্রশ্ন করেছেন।
তাঁর মতে, মহাকাশ ভ্রমণ কোনো বিলাসিতা নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা।
নিলি বেন হায়াউন-স্টেপ্যানিয়ানের কাজের ধরন অন্যদের থেকে আলাদা।
তিনি বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং মতামতকে গুরুত্ব দেন।
তাঁর ছবিতে বিজ্ঞানী, অ্যাক্টিভিস্ট, এবং রূপান্তরকামী মানুষেরাও তাঁদের ভাবনা প্রকাশ করেন।
বেন হায়াউন-স্টেপ্যানিয়ান-এর মতে, মহাকাশযাত্রা একটি ‘বৈপ্লবিক’ ধারণা।
এখানে প্রচলিত ধারণা ভেঙে নতুন কিছু তৈরি করার সুযোগ রয়েছে।
তাঁর ছবিতে সমাজের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কণ্ঠস্বর শোনা যায়, যা এই ছবিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
তাঁর নির্মিত ‘ডোপেলগ্যাঞ্জার্স³’ ছবিটি আগামী ২ ও ৭ জুন লন্ডনের একটি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান