শেয়ারি পাপিনি’র মিথ্যা অপহরণ: পরিবারের ভাঙন আর সত্যের অনুসন্ধান
২০১৬ সালের নভেম্বরের ২ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের রেড্ডিং শহর থেকে শেররি পাপিনি নামের এক নারীর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর তিনি ফিরে এসে জানান, তাকে অপহরণ করা হয়েছিল এবং দুই হিস্পানিক মহিলা তাকে বন্দী করে রেখেছিল, এমনকি তার উপর চালানো হয়েছিল শারীরিক নির্যাতনও।
এই ঘটনায় হতবাক হয়ে গিয়েছিল তার পরিবার। তার বাবা-মা, রিচার্ড গ্রাফ এবং লরেটা গ্রাফ, তাদের মেয়ের ফিরে আসার খবরে প্রথমে আনন্দিত হয়েছিলেন।
কিন্তু ঘটনার কয়েক বছর পর, তদন্তে জানা যায় যে শেররি আসলে অপহরণের গল্প সাজিয়েছিলেন।
শেররি’র এই ভুয়া গল্পের পেছনে ছিল অন্য এক কারণ। তদন্তে প্রকাশ হয়, তিনি তার প্রাক্তন প্রেমিক জেমস রেয়েসের সাথে মিলিত হয়েছিলেন এবং তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল।
পরে, শেররি স্বীকার করেন যে তিনি মিথ্যা বলেছিলেন এবং এরপর তাকে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়া ও প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর, আদালত তাকে ১৮ মাসের কারাদণ্ড দেয়।
ঘটনাটি শেররির পরিবারে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। তার বাবা-মা তাদের বন্ধু এবং পরিচিতদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
তাদের সম্মানহানি হয় এবং তারা সামাজিক জীবনেও নানা সমস্যার সম্মুখীন হন। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি তথ্যচিত্রে শেররি তার মিথ্যা বলার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন এবং এর জন্য কিছুটা অনুশোচনাও প্রকাশ করেছেন।
শেররির এই মিথ্যাচারের কারণে তার বাবা-মায়ের মধ্যে তৈরি হয় গভীর ক্ষত। লরেটা গ্রাফ, তার মেয়ের অপহরণের গল্পটিকে প্রথমে বিশ্বাস করেননি।
তিনি মনে করতেন, শেররি তার বিবাহিত জীবন থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন। তথ্যচিত্রগুলোতে তারা তাদের মেয়ের এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং তাদের বর্তমান সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেছেন।
তারা জানিয়েছেন যে, এই ঘটনার কারণে তারা অনেক কিছু হারিয়েছেন।
বর্তমানে শেররি তার বাবা-মায়ের সঙ্গেই বসবাস করছেন। রিচার্ড গ্রাফ জানিয়েছেন, এই ঘটনার কারণে তাদের জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে।
তারা তাদের বন্ধু এবং আত্মীয়-স্বজনদের সমর্থন হারিয়েছেন। শেররিও স্বীকার করেছেন যে, তার এই মিথ্যা বলার কারণে তার বাবা-মাকে অনেক সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়, তা হলো—মিথ্যা বলার ফল সবসময়ই ভয়াবহ হতে পারে এবং এর মাধ্যমে একটি পরিবারের সম্পর্কও ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল