বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা এবং এর শিকার হওয়া মানুষগুলোর কথা তুলে ধরতে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ‘রাইট হিয়ার, রাইট নাও গ্লোবাল ক্লাইমেট সামিট’-এর অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রদর্শনী চলছে, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের পরিবেশ বিপর্যয়ের ছবি স্থান পেয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (OHCHR)-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই প্রদর্শনী জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি মানবাধিকার সংকট হিসেবে তুলে ধরে সমাধানের পথ খোঁজার চেষ্টা করছে।
প্রদর্শনীটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফটোগ্রাফি ফোর হিউম্যানিটি: এ লেন্স অন ক্লাইমেট জাস্টিস’। এতে ৩১ জন আলোকচিত্রীর তোলা ছবি স্থান পেয়েছে, যেখানে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশ দূষণের কারণে তাদের নিজ নিজ সম্প্রদায়ে নেমে আসা বিপর্যয়গুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
ছবিগুলোতে মরুকরণ, বন্যা, প্লাস্টিক দূষণ এবং নদীভাঙনের মতো বিষয়গুলো বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের দরিদ্র ও দুর্বল দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কার্বন নিঃসরণে তাদের অবদান কম হলেও, চরম আবহাওয়ার কারণে তারাই বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
প্রদর্শনীতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি বাড়ির ছবি দেখা যায়, যা গঙ্গার দিকে ভেঙে পড়ছে। এছাড়া, মিয়ানমারের ইনলে লেকের শিশুদের ছবি রয়েছে, যারা প্লাস্টিক কুড়িয়ে পরিবেশ রক্ষার চেষ্টা করছে।
আয়োজকরা আশা করছেন, এই প্রদর্শনী জলবায়ু সংকটকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে সাহায্য করবে।
ফটোগ্রাফিকা-এর গ্লোবাল ভাইস প্রেসিডেন্ট পাওলাইন বেন্টহেদে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হলো আলোকচিত্রের মাধ্যমে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা। এই প্রদর্শনী বিশ্ব উষ্ণায়নের কেন্দ্রে থাকা মানবাধিকারের বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যা পৃথিবীর প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং এর বাসিন্দাদের জীবনকে প্রভাবিত করে।”
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষজন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে এখানকার মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হচ্ছে।
তাই, এই ধরনের প্রদর্শনীগুলো আমাদের সচেতনতা বাড়াতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন