মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের এক শান্ত শহরতলী, যেখানে এক নারী, ক্যান্ডি মন্টগোমারি, ১৯৮০ সালে তার বন্ধু বেটি গোরকে কুঠার দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এই ঘটনা আলোড়ন সৃষ্টি করে, যা আজও মানুষের মনে গভীর দাগ কাটে।
ঘটনাটি এতটাই চাঞ্চল্যকর ছিল যে, এর উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে দুটি মিনি সিরিজ – ‘ক্যান্ডি’ এবং ‘লাভ অ্যান্ড ডেথ’।
ক্যান্ডি এবং তার স্বামী, প্যাট মন্টগোমারি, তাদের স্থানীয় চার্চে পরিচিত মুখ ছিলেন। তাদের জীবনযাত্রা ছিল সাধারণভাবে স্বাভাবিক, কিন্তু বেটি গোরকে হত্যার অভিযোগে ক্যান্ডিকে গ্রেফতারের পর সবকিছু ওলট-পালট হয়ে যায়।
তদন্তে জানা যায়, ক্যান্ডির সঙ্গে বেটির স্বামী অ্যালান গোরের বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এই সম্পর্কের জের ধরেই ঘটে হত্যাকাণ্ড।
ঘটনার দিন, অ্যালান ব্যবসার কাজে বাইরে ছিলেন। বেটির কোনো সাড়া না পেয়ে তিনি প্রতিবেশী এবং ক্যান্ডিকে ফোন করেন। ক্যান্ডি তখন তাদের মেয়ের দেখাশোনা করছিলেন।
পরে যখন প্রতিবেশীরা বেটির বাড়িতে প্রবেশ করেন, তখন তারা ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখতে পান – ঘরের মেঝেতে রক্তের স্রোত, আর বেটির নিথর দেহ।
পুলিশ ক্যান্ডিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রথমে তিনি হত্যার কথা অস্বীকার করেন, কিন্তু অ্যালান তার সাথে সম্পর্কের কথা স্বীকার করার পর, ক্যান্ডি আত্মসমর্পণ করেন।
আদালতে তিনি আত্মরক্ষার যুক্তিতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করেন। ক্যান্ডির দাবি ছিল, বেটি প্রথমে কুঠার হাতে তেড়ে এসেছিলেন, এবং ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে তিনি বেটিকে হত্যা করতে বাধ্য হন।
বিচারের রায়ে ক্যান্ডি মুক্তি পান, যা অনেকের কাছেই ছিল অবিশ্বাস্য।
এই ঘটনার পর মন্টগোমারি পরিবার জর্জিয়ায় চলে যায় এবং পরবর্তীতে ক্যান্ডি ও প্যাট-এর বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ক্যান্ডি পরে কাউন্সেলিংয়ের উপর পড়াশোনা করেন এবং বর্তমানে তিনি ক্যান্ডেস হুইলার নামে পরিচিত।
অন্যদিকে, অ্যালান গোরও দ্বিতীয় বিয়ে করেন, তবে সেটিও টেকসই হয়নি। বেটির পরিবার, বিশেষ করে তার বাবা-মা তাদের নাতনিদের বড় করে তোলেন।
বেটির ভাই, রন পোমেরয় জানান, বেটির দুই মেয়ে, আলিসা এবং বেথানি, এখন পূর্ণবয়স্ক এবং তাদের নিজস্ব জীবন রয়েছে।
এই ঘটনার পর মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে, কেন এমনটা ঘটল? কিভাবে একজন মানুষ এতটা নৃশংস হতে পারে?
এই মামলার বিচার এবং এর পরবর্তী ঘটনাগুলো মানুষের মনে গভীর কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি একদিকে যেমন ভালোবাসার জটিলতা প্রকাশ করে, তেমনি প্রতিশোধ এবং হত্যার মতো বিষয়গুলোকেও সামনে নিয়ে আসে।
তথ্য সূত্র: পিপল