নববধূ আনা, যিনি আমেরিকার ডেলাওয়্যার অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা, তার প্রয়াত মায়ের স্মৃতিকে সম্মান জানাতে এক ব্যতিক্রমী পথ বেছে নিয়েছিলেন। ২০০৮ সালে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৪৬ বছর বয়সে মায়ের মৃত্যুর পর, তিনি চেয়েছিলেন তার বিয়েতে এমন কিছু করতে যা মায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে।
ঐতিহ্যবাহী শোকসভার পরিবর্তে, আনা তার মায়ের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে এক ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন।
আনা যখন তার মায়ের ১৯৮০-এর দশকের পুরনো বিয়ের পোশাকটি খুঁজে পান, তখন তিনি জানতেন, এই পোশাকটির মাধ্যমেই তিনি মায়ের স্মৃতিকে ধরে রাখবেন। মায়ের মৃত্যুর সময় আনা মাত্র ১৫ বছরের কিশোরী ছিলেন।
মায়ের স্মৃতিগুলো হৃদয়ে ধারণ করে, তিনি পোশাকটির হাতাগুলো তার ব্রাইডাল শাওয়ারে ব্যবহার করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আত্মীয়-স্বজনের চোখে জল এসে গিয়েছিল, যখন তারা মায়ের স্মৃতি বিজড়িত সেই পোশাকের হাতাগুলো দেখতে পান।
বিয়ের দিনটিকে আরও বিশেষ করে তুলতে আনা অন্যরকম পরিকল্পনা করেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের জন্য তিনি একটি বিশেষ উপহারের ব্যবস্থা করেন।
মায়ের বিয়ের পোশাকের অবশিষ্ট কাপড় দিয়ে তিনি ফিতা তৈরি করেন এবং সেই ফিতাগুলো পুনর্ব্যবহৃত ধাতব ঘণ্টাগুলির সাথে বেঁধে দেন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে যখন কনে ও বর হলঘর ত্যাগ করছিলেন, তখন উপস্থিত সকলে একসাথে সেই ঘণ্টা বাজিয়ে তাদের প্রতি শুভকামনা জানান।
আনার ভাষায়, মায়ের পোশাক কাটাটা তার কাছে “একটু নিষ্ঠুর” মনে হলেও, এটি ছিল “মা-এর পথ আর আমার পথের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের সুন্দর উপায়”। এই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করা হলে, তা নেটিজেনদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
অনেকে মন্তব্য করেন, “যেন মা আবারও তার মেয়েকে আশীর্বাদ করছেন।”
বিয়ের পর, আনা তার বন্ধুদের মধ্যে ঘণ্টাগুলো বিতরণ করেন। বন্ধুদের অনেকেই তাদের বাড়িতে ঘণ্টাগুলো সাজিয়ে ছবি তুলেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।
আনা বলেন, এই উপহারগুলো ছিল মায়ের “ভালোবাসা” তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া, যারা মাকে চিনতেন এবং যারা চিনতে পারেননি তাদের কাছেও।
আনার বিয়ের দিনটি ছিল আবেগ আর ভালোবাসায় পরিপূর্ণ। মায়ের স্মৃতি ছাড়াও, তিনি তার মায়ের একটি সাদা গোলাপের পিন ব্যবহার করেন, যা তিনি তার বান্ধবীর কাছ থেকে পেয়েছিলেন।
আনা মনে করেন, তার মা হলে পোশাকটির পুনর্ব্যবহার দেখে খুব খুশি হতেন। মায়ের সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা মা-মেয়ে হিসেবে খুব ঘনিষ্ঠ ছিলাম, যদিও তিনি অল্প বয়সে মারা যাওয়ায় আমাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বের পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত যত্নশীল, সহানুভূতিশীল এবং অনুপ্রেরণাদায়ী একজন মানুষ।”
তথ্য সূত্র: পিপল