ফিনল্যান্ড: বাল্টিক সাগরে সাবমেরিন ক্যাবল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে রুশ-সংযুক্ত জাহাজের কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ফিনল্যান্ড কর্তৃপক্ষ বাল্টিক সাগরে ফিনল্যান্ড ও এস্তোনিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী সাবমেরিন ক্যাবল ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে একটি রুশ-সংযুক্ত জাহাজের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ এনেছে। গত বছর ২৫শে ডিসেম্বরের ঘটনা এটি।
ফিনিশ কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘ঈগল এস’ নামক একটি তেলবাহী জাহাজ তার অ্যাংকর টেনে নেওয়ার ফলে এস্তোনিয়ার সঙ্গে ফিনল্যান্ডের বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ফিনল্যান্ড পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন জাহাজের ক্যাপ্টেন, চিফ মেট ও সেকেন্ড মেট। তাঁদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধমূলক আচরণ ও টেলিযোগাযোগে গুরুতরভাবে হস্তক্ষেপের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই কর্মকর্তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি। ফিনিশ কর্তৃপক্ষের মতে, জাহাজের নিরাপত্তা, দিকনির্দেশনা এবং পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন তাঁরা। তদন্তকারীরা তাঁদের জাহাজের অবস্থা এবং অ্যাংকর ফেলার বিষয়ে তাঁদের দায়িত্ব খতিয়ে দেখছেন।
তদন্ত শেষে ফিনিশ কর্তৃপক্ষ এই মামলার সম্ভাব্য অভিযোগের জন্য তাদের অনুসন্ধান প্রসিকিউটরদের কাছে হস্তান্তর করেছে। ‘ঈগল এস’ জাহাজটি কুক আইল্যান্ডে নিবন্ধিত, তবে ফিনিশ কাস্টমস কর্মকর্তা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাহী কমিশন এটিকে রাশিয়ার ‘ছায়া বহর’-এর অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এই বহরটি মূলত পুরনো জাহাজ দিয়ে গঠিত এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি দিতে এগুলো ব্যবহার করা হয়। এসব জাহাজের মালিকানা প্রায়ই গোপন থাকে এবং তাদের কোনো পশ্চিমা নিয়ন্ত্রিত বীমা নেই।
এই ঘটনার জেরে আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনা বেড়েছে। বিশেষ করে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোপে নাশকতা চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
ফিনল্যান্ড ও এস্তোনিয়ার মধ্যেকার এই ক্যাবলটি প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার (৯০ মাইল) দীর্ঘ এবং সমুদ্রের গভীরতা প্রায় ৯০ মিটার (২৯৫ ফুট)। এই ক্যাবলটি এস্তোনিয়ার শীতকালের বিদ্যুতের চাহিদার প্রায় অর্ধেক পূরণ করতে সহায়তা করে।
এই ঘটনার ফলে বাল্টিক অঞ্চলের দেশগুলোতে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। সমুদ্রের নিচে থাকা এই কেবল এবং পাইপলাইনগুলো নর্ডিক, বাল্টিক এবং মধ্য ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।
এর মাধ্যমে বাণিজ্য, জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধি পায় এবং কিছু ক্ষেত্রে রাশিয়ার জ্বালানি নির্ভরতাও কমে আসে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস