টাইটান ডুবোজাহাজের ভয়াবহ দুর্ঘটনার স্মৃতি আজও তাড়া করে ইউটিউবার জ্যাক কোহলারকে। গত বছর আটলান্টিক মহাসাগরে ডুব দিতে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান পাঁচ জন। সেই ডুবোযানে যাওয়ার কথা ছিল এই স্কুবা ডাইভিং উৎসাহীর।
কিন্তু শেষ মুহূর্তে অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি। সম্প্রতি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাওয়া ‘টাইটান: দ্য ওশেনগেট সাবমার্সিবল ডিজাস্টার’ নামের একটি তথ্যচিত্রে নিজের সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন কোহলার।
কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলের কাছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিল ওশেনগেট কোম্পানির তৈরি করা এই ডুবোযানটি। কিন্তু গভীর সমুদ্রে নামার কিছুক্ষণ পরেই সেটি বিস্ফোরিত হয়।
কোহলার জানান, দুর্ঘটনার কয়েক দিন আগেও তিনি এই ডুবোযানের বাইরের অংশে ছিলেন। তার মনে হয়, “যদি সেদিন আমি থাকতাম!”
প্রায় দু’বছর আগে, ওশেনগেট কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা স্টকটন রাশ-এর সঙ্গে এই ডুবোযানে যাওয়ার কথা ছিল কোহলার এবং তার বান্ধবী কাইন্ডাল জনসনের। ইউটিউবে ‘ডালমিড’ নামে পরিচিত কোহলার তার দুঃসাহসিক স্কুবা ডাইভিং ভিডিওর জন্য সুপরিচিত।
এই ডুবোযানে যাওয়ার সুযোগ পাওয়ার পর তার উৎসাহ আরও বেড়ে যায়।
২০২৩ সালের বসন্তে, তিনি এবং তার বান্ধবীকে ডুবোযানের সাপোর্ট শিপ ‘পোলার প্রিন্সে’ সাত দিন থাকতে হয়েছিল। কোহলার জানান, সমুদ্রযাত্রায় তিনি অসুস্থ বোধ করছিলেন।
তিনি বলেন, “ওখানে যারা কাজ করতেন, তারা সবাই খুব ব্যস্ত ছিলেন, মনে হচ্ছিল যেন বহু কোটি টাকার একটা প্রজেক্ট চলছে।” ডুবোযানটির বাইরের দিকে কিছু সামান্য ত্রুটি ছিল বলেও তিনি জানান।
তবে রাশ এবং তার দলের উপর আস্থা থাকার কারণে তিনি সে বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।
তবে, খারাপ আবহাওয়ার কারণে শেষ পর্যন্ত টাইটানিকের কাছে ডুব দেওয়া বাতিল করা হয়। এর পরিবর্তে, নিউফাউন্ডল্যান্ডের গ্র্যান্ড ব্যাংকস-এর কাছে একটি সংক্ষিপ্ত ডুব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কোহলার প্রায় ৩৩ ফুট গভীরে, ডুবোযানে কয়েক ঘণ্টা সময় কাটান। এরপর কুয়াশা নামলে তারা জাহাজে ফিরে আসেন।
কোহলারের ভাষায়, “সম্ভবত কুয়াশা আমার জীবন বাঁচিয়েছিল।”
মার্কিন কোস্টগার্ডের তদন্ত এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দুর্ঘটনার মূল কারণ ছিলেন স্টকটন রাশ। তার সিদ্ধান্তগুলোই এই বিপর্যয় ডেকে এনেছিল।
রাশ চেয়েছিলেন, নিরাপত্তা ঝুঁকি সত্ত্বেও, সমুদ্রের গভীরে পর্যটকদের নিয়ে গিয়ে ইতিহাস তৈরি করতে। কোহলার মনে করেন, “সীমা অতিক্রম করার এটাই নিয়ম।”
তথ্য সূত্র: পিপল