প্রখ্যাত অভিনেত্রী রেবেল উইলসন, যিনি একসময় “ফ্যাট অ্যামি” চরিত্রটির জন্য পরিচিত ছিলেন, তার স্বাস্থ্য নিয়ে দীর্ঘ এক যাত্রা করেছেন। ওজন কমানোর এই অভিজ্ঞতা শুধু তার শারীরিক পরিবর্তনেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি তার কর্মজীবনেও এনেছে বড় ধরনের পরিবর্তন।
২০২০ সালে তিনি “স্বাস্থ্য বছর” শুরু করার ঘোষণা দেন এবং সেই সময় থেকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে মনোযোগ দেন, ওজন কমানোর সংখ্যাটির চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন শরীরের সুস্থতার প্রতি।
রেবেল জানিয়েছেন, অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার পেছনে তার আবেগগত কারণ ছিল। আত্ম-ভালোবাসার অভাবের কারণে তিনি অনেক সময় বেশি খেতেন। এমনকি তিনি দিনে প্রায় ৩,০০০ ক্যালোরি গ্রহণ করতেন, যার বেশিরভাগই ছিল শর্করা জাতীয় খাবার।
পরবর্তীতে তিনি উপলব্ধি করেন যে, নিজের প্রতি যত্ন নেওয়াটা খুব জরুরি। ২০১৩ সালে তার বাবার আকস্মিক মৃত্যু তাকে গভীরভাবে শোকাহত করে এবং সেই সময়ে তিনি “অনুভূতি ভোঁতা” করার জন্য খাবারের আশ্রয় নিতেন।
২০২০ সালের মার্চ মাসে কোভিড-১৯ মহামারী শুরু হওয়ার পর, রেবেল অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান এবং কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। সেই সময়টাতে তিনি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার গুরুত্ব অনুভব করেন এবং ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেন।
তিনি জানান, শুরুতে তিনি প্রায় ৪০ পাউন্ড ওজন কমিয়েছিলেন। এরপর স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি আরও ভালো অনুভব করতে শুরু করেন।
তিনি উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করা শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে তার জীবনযাত্রায় ভারসাম্য আনেন।
তবে, এই পথ সবসময় মসৃণ ছিল না। ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে বিভিন্ন চাপের কারণে তার ওজন মাঝে মাঝে বেড়েছে। একবার তিনি জানান, কাজের চাপে তিনি প্রায় ১৪ কেজি ওজন বাড়িয়ে ফেলেছিলেন।
এরপর তিনি আবার স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রায় ফিরে আসার চেষ্টা করেন এবং বর্তমানে সুস্থ জীবনযাপনের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
ওজন কমানোর এই যাত্রায় রেবেল উইলসনের কর্মজীবনেও পরিবর্তন আসে। তিনি জানান, ওজন কমানোর পর তাকে আরও সিরিয়াস চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হতে শুরু করে।
কমেডি চরিত্র থেকে বেরিয়ে এসে তিনি “জুলিয়েট অ্যান্ড রোমিও” এবং “দ্য আলমন্ড অ্যান্ড দ্য সিহর্স”-এর মতো চলচ্চিত্রে কাজ করেন।
রেবেল উইলসন তার স্বাস্থ্য যাত্রা সম্পর্কে বলেছেন, “আমি নিজেকে নিয়ে গর্বিত, কারণ আমি আমার জীবনকে আরও উন্নত করেছি।” তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শুধুমাত্র একটি সংখ্যার হিসাব নয়, বরং এটি সামগ্রিক জীবনযাত্রার একটি পরিবর্তন।
তার এই যাত্রা আমাদের দেখিয়ে দেয়, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজন আত্ম-অনুরাগ এবং একটি ইতিবাচক মানসিকতা।
তথ্য সূত্র: পিপল