অস্ট্রেলিয়ার এক তরুণীর স্তন হ্রাস সার্জারি, নতুন জীবন লাভের গল্প।
অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনে বসবাসকারী ২৪ বছর বয়সী অ্যামি নামের এক তরুণীর স্তন হ্রাস সার্জারির (Breast Reduction Surgery) মাধ্যমে জীবন পরিবর্তনের এক অসাধারণ গল্প সম্প্রতি ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর স্তনের আকারের প্রভাব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা কষ্টের অবসান ঘটিয়ে, তিনি কিভাবে সুস্থ জীবনে ফিরে এসেছেন, সেই কাহিনী তুলে ধরেছেন।
অ্যামির ভাষায়, অতিরিক্ত স্তনের কারণে তিনি দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিকেই বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন। বিশেষ করে, পিঠের ব্যথায় তিনি ছিলেন অতিষ্ঠ। সামাজিক অনুষ্ঠানে যাওয়া কিংবা বন্ধুদের সাথে দেখা করাও তার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
অতিরিক্ত স্তনের কারণে পোশাক পরাতেও তার অসুবিধা হতো, যা আত্মবিশ্বাসের অভাব তৈরি করত। এছাড়া, শরীরে ওজন বেশি হওয়ায় চলাফেরায়ও সমস্যা হতো।
চিকিৎসকদের মতে, অতিরিক্ত স্তন মহিলাদের জন্য শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘদিনের ব্যথার কারণে অনেক সময় দৈনন্দিন কাজকর্ম করা কঠিন হয়ে পড়ে। অ্যামির ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছিল।
শরীরে অস্ত্রোপচারের পর সেরে ওঠার সময় তিনি কিছু জটিলতার সম্মুখীন হয়েছিলেন, কিন্তু এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ।
অ্যামি জানান, স্তন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তিনি বেশ কয়েক বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে ভেবেছেন। প্রথমে তিনি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার কথা ভেবেছিলেন, যেখানে প্রায় ২০,০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ হতে পারত।
কিন্তু পরবর্তীতে, অস্ট্রেলিয়ার সরকারি স্বাস্থ্য বীমা পদ্ধতির (মেডিকেয়ার) মাধ্যমে বিনামূল্যে অস্ত্রোপচার করানোর সিদ্ধান্ত নেন। সরকারি স্বাস্থ্য বীমার মাধ্যমে অস্ত্রোপচার করানোর জন্য বেশ কয়েকবার আবেদন করতে হয়েছিল, এবং অবশেষে তিনি সফল হন।
অ্যামির অস্ত্রোপচারটি সফলভাবে সম্পন্ন হয় এবং তার স্তনের আকার এইচ কাপ থেকে ডি কাপে আনা হয়। অস্ত্রোপচারের পর তিনি এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেক ভালো আছেন। অস্ত্রোপচারের পর পোশাক কেনাকাটার অভিজ্ঞতাও তার জন্য আনন্দের।
আগে যেখানে একটি ব্রা কিনতে ১০০ ডলারের বেশি খরচ হতো, সেখানে এখন মাত্র ৫ ডলারে ব্রা কিনতে পারেন তিনি।
নিজের এই অভিজ্ঞতা তিনি টিকটকে (TikTok) শেয়ার করেছেন, যা দ্রুত ভাইরাল (Viral) হয়। তার ভিডিওটি ইতোমধ্যে কয়েক কোটি ভিউ (View) হয়েছে।
এর মাধ্যমে তিনি অন্যদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে চান এবং যারা একই ধরনের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য একটি সহায়ক কমিউনিটি (Community) তৈরি করতে চান।
বাংলাদেশেও স্তন হ্রাস সার্জারি একটি পরিচিত বিষয়। তবে, সরকারি স্বাস্থ্যখাতে এই ধরনের চিকিৎসার সুযোগ সীমিত। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এর খরচ বেশ বেশি।
তাই, সরকারি স্বাস্থ্য বীমা পদ্ধতির সুবিধা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন, যাতে করে নারীরা তাদের শারীরিক সমস্যার সমাধানে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারে।
অ্যামির এই গল্প আমাদের সকলের জন্য একটি উদাহরণ। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে জীবনকে সুন্দরভাবে উপভোগ করা যায়। আপনার যদি কোনো স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা থাকে, তবে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তথ্য সূত্র: পিপল