বন্ধ্যত্বের সাথে লড়াই করা এক তরুণীর মাতৃত্বের পথে যাত্রা: এক বিরল গল্পের উন্মোচন
চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতির এই যুগেও, কিছু মানুষের জীবন এক অপ্রত্যাশিত মোড় নেয়। তেমনই এক গল্প হলো, লেসি নামের এক তরুণীর, যিনি জানতে পারেন যে তিনি জন্মগতভাবে জরায়ুবিহীন।
এই বিরল শারীরিক অবস্থার (Mayer-Rokitansky-Küster-Hauser syndrome – MRKH) কারণে তিনি স্বাভাবিকভাবে মা হতে পারবেন না। কিন্তু লেসি, যিনি সবসময় মা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন, এই কঠিন সত্যকে মেনে নিয়ে ভালোবাসাপূর্ণ এক পরিবারের আশায় বুক বেঁধেছেন।
লেসির মা, আন্ডি, মেয়ের এই কঠিন সময়ে সবসময় তার পাশে ছিলেন। কৈশোরে যখন লেসির মাসিক শুরু হয়নি, তখনই তারা কিছুটা চিন্তিত হয়েছিলেন।
ডাক্তারদের পরামর্শে প্রথমে বিষয়টি স্বাভাবিক মনে করা হলেও, পরবর্তীতে পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা পরে তার MRKH রোগ। এই খবরে লেসির জীবনে নেমে আসে গভীর দুঃখ। স্বাভাবিকভাবে মা হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যাওয়ার বেদনা তাকে ছুঁয়ে যায়।
কিন্তু লেসি ভেঙে পড়েননি। মা আন্ডির দৃঢ় সমর্থন এবং স্বামীর ভালোবাসায় তিনি নতুন করে পথ খুঁজে পান। লেসির স্বামী, পিট, সবসময় তার পাশে ছিলেন এবং তাদের সন্তান ধারণের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিলেন।
সন্তান না হওয়ার বিষয়টি আমার কাছে কোনো সমস্যা নয়। আমরা একসঙ্গে পথ চলব।
তাদের এই অটল সমর্থন লেসিকে আরও শক্তিশালী করেছে। এই কঠিন সময়ে, লেসি এবং তার মা MRKH আক্রান্ত নারীদের একটি সমর্থন গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হন।
সেখানে অন্যদের কাছ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতা, সাহস জুগিয়েছে লেসিকে। তিনি উপলব্ধি করেন, তিনি একা নন। অনেক নারী এই সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছেন এবং তাদের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি শিখেছেন কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়।
লেসি এখন তার স্বামীর সঙ্গে মিলে সারোগেসির মাধ্যমে মাতৃত্বের স্বাদ পাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা এর জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন। বর্তমানে তারা এমন একটি স্থানে বসবাস করছেন যেখানে সারোগেসি আইনগতভাবে সহজ।
লেসির এই যাত্রা আমাদের সমাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। এটি শুধু একটি ব্যক্তিগত গল্প নয়, বরং সমাজের চোখে বন্ধ্যত্ব এবং বিকল্প পরিবার গঠনের ধারণা নিয়ে নতুন করে ভাবার একটি সুযোগ।
লেসির গল্প, সমাজের মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা যোগায়, যারা হয়তো এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।
অন্যদের সন্তান না হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করা উচিত নয়, বরং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত।
লেসিও সবাইকে একই পরামর্শ দেন, “তাদের পাশে থাকুন এবং তাদের কথা শুনুন।”
তথ্য সূত্র: People