শিকাগোর একটি গ্যালারিতে সম্প্রতি এমন একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে যৌন পরিচিতি সম্পর্কে নতুনভাবে আলোকপাত করা হয়েছে।
‘দ্য ফার্স্ট হোমোসেক্সুয়ালস: দ্য বার্থ অফ আ নিউ আইডেন্টিটি, ১৮৬৯-১৯৩৯’ শীর্ষক এই প্রদর্শনীতে মূলত পশ্চিমা বিশ্বে ‘সমকামিতা’ এবং ‘বিপরীতকামিতা’র মতো ধারণাগুলো কীভাবে গড়ে উঠেছিল, সেই বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রদর্শনীটির কিউরেটর জোনাথন ডি. কাটস-এর মতে, এই ধারণাগুলো সমাজের গভীরে প্রবেশ করেছে এবং একটি কঠোর দ্বৈততা তৈরি করেছে।
এই প্রদর্শনীতে বিভিন্ন সময়ের প্রায় ৩০০টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের শিল্পী এবং তাদের চিত্রিত বিষয়বস্তু।
প্রদর্শনীতে এলজিবিটিকিউ+ লেখকদের প্রতিকৃতি, ভিক্টোরিয়ান যুগের ছবি, এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার ছবিও স্থান পেয়েছে।
ঐতিহাসিক তথ্য বলছে, উনিশ শতকের আগে মানুষের যৌন প্রবণতা অনেকটা ‘কিছু করা’র মতোই ছিল, ‘কিছু হওয়া’র মতো নয়।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, এই ধারণার পরিবর্তন হয় এবং ‘সমকামিতা’ ও ‘বিপরীতকামিতা’র মতো শব্দগুলো পরিচিতি লাভ করে।
এই ধারণাগুলোর জন্ম হয় মূলত পশ্চিমা বিশ্বে, এবং ধীরে ধীরে তা উপনিবেশের মাধ্যমে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে, কাটস মনে করেন, এই দ্বৈত ধারণাটি একটি কৃত্রিম বিভাজন তৈরি করেছে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, পশ্চিমা বিশ্বের বাইরেও অনেক সংস্কৃতিতে যৌনতা এবং লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে আলোচনা স্বাভাবিক ছিল।
উদাহরণস্বরূপ, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে, উপনিবেশ স্থাপনকারীরা একই লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ সম্পর্কিত বিষয়ে কঠোর আইন তৈরি করে, যা আজও সেখানকার এলজিবিটিকিউ+ সম্প্রদায়ের অধিকারের ওপর প্রভাব ফেলে।
প্রদর্শনীতে শিল্পী পল গঁগার চিত্রকর্মও স্থান পেয়েছে, যেখানে তিনি তাহিতির মানুষের জীবনযাত্রা ফুটিয়ে তুলেছেন।
তবে, এই ধরনের শিল্পকর্মগুলো প্রায়শই উপনিবেশিক দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরে।
বর্তমানে, শিল্পকলার ইতিহাসে কুইয়ার আর্টকে একটি বিশেষ স্থান দেওয়া হয়।
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মূলধারার শিল্পকর্মে এই বিষয়গুলো সেভাবে গুরুত্ব পায় না।
প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পকর্মগুলোর মাধ্যমে দর্শকদের মধ্যে যৌনতা এবং লিঙ্গ পরিচয় সম্পর্কে নতুন ধারণা তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: সিএনএন