গ্রিনল্যান্ডে পালিত হলো জাতীয় দিবস, এক অভূতপূর্ব উৎসব।
দিনের আলো ২৪ ঘণ্টা—এমন এক বিরল অভিজ্ঞতার সাক্ষী থেকে গ্রিনল্যান্ডে পালিত হলো তাদের জাতীয় দিবস। গ্রীষ্মের শুরুতে হওয়া এই উৎসবটি একইসঙ্গে উদযাপন করে দেশটির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর মানুষের একতা।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর গ্রীষ্মকালীন অয়নকালে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
উত্তর মেরুর কাছাকাছি অবস্থিত এই স্বশাসিত ডেনীয় অঞ্চলের মানুষেরা দীর্ঘ দিন ধরে এই বিশেষ দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকে।
গ্রীষ্মের শুরুতে, যখন সূর্যের আলো ২৪ ঘণ্টা তাদের সঙ্গেই থাকে, তখন তারা একত্রিত হয়ে উদযাপন করে।
স্থানীয়রা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে সজ্জিত হয়ে পতাকা হাতে শহর প্রদক্ষিণ করে, গান গায়, আর নানা ধরনের উৎসবে মেতে ওঠে।
এই দিনের অন্যতম আকর্ষণ হলো সীল শিকারের প্রতিযোগিতা।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা নৌকায় চড়ে সাগরে যায় এবং সীল শিকার করে।
বিজয়ীদের সম্মান জানানো হয়, এবং শিকার করা পশুর মাংস বয়স্ক আশ্রমগুলোতে বিতরণ করা হয়।
চামড়া দিয়ে তৈরি করা হয় বিভিন্ন পোশাক।
স্থানীয়রা মনে করেন, এই ধরনের ঐতিহ্য তাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
এই উৎসব শুধু আনন্দ আর উৎসবের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
এটি গ্রিনল্যান্ডের মানুষের আত্মপরিচয় এবং সংস্কৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসার প্রতীক।
স্থানীয়দের মতে, আধুনিকতা ও বিশ্বায়নের যুগে তাদের সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
তাই তারা চান, তাদের ঐতিহ্য যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে একইভাবে বজায় থাকে।
তবে, গ্রিনল্যান্ডের এই উৎসবের খবর আন্তর্জাতিক মহলে অন্য একটি কারণেও গুরুত্ব পেয়েছে।
এক সময় যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই দ্বীপটিকে নিজেদের অংশ করার আগ্রহ দেখিয়েছিল।
যদিও ডেনমার্ক এবং গ্রিনল্যান্ডের নেতারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন, তবুও গ্রিনল্যান্ডের কৌশলগত গুরুত্বের বিষয়টি সবসময় আলোচনায় থাকে।
এই কারণে, জাতীয় দিবসের উদযাপন শুধু একটি উৎসব নয়, বরং তাদের স্বকীয়তা এবং স্বাধীনতার প্রতিচ্ছবিও বটে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস