মিলান ফ্যাশন উইকে পরিবেশ-বান্ধব পোশাকের চমক, ‘সাইমন ক্র্যাকার’-এর নতুন সংগ্রহ।
ফ্যাশন দুনিয়ায় পরিবেশ সচেতনতা বাড়ছে, আর সেই সঙ্গে বাড়ছে পুরোনো পোশাককে নতুন রূপে ব্যবহারের প্রবণতা। সম্প্রতি, মিলান ফ্যাশন উইকে ইতালীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘সাইমন ক্র্যাকার’ তাদের বসন্ত-গ্রীষ্ম ২০২৬ সংগ্রহ উপস্থাপন করে, যা ছিলো এই ধারণারই প্রতিফলন।
এই সংগ্রহের মূল আকর্ষণ ছিল পুরোনো কাপড় থেকে তৈরি করা অসাধারণ সব পোশাক, যেগুলোর সঙ্গে ছিল ব্র্যান্ডের নিজস্ব একটি সাধারণ পোশাকের ধারণা।
ডিজাইনার ফিলিপ্পো বিরাগি এবং সিমোনে বোত্তে-র মতে, পুরোনো কাপড়কে নতুন রূপ দেওয়ার এই প্রক্রিয়াটাই তাদের গল্পের ভাষা। তারা তাদের পোশাকের নকশার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এবারের সংগ্রহটির নাম ছিল “শয়তানDetails-এ”।
তারা খ্যাতিমান বেলজিয়ান ডিজাইনার মার্টিন মার্জেলার ডিজাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। মার্জেলার ডিজাইন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা পোশাকগুলোতে ব্যবহার করেছেন বড় বোতাম, সেফটিপিন এবং জিপার, যা পোশাকগুলোকে দিয়েছে ভিন্নতা।
বিরাগি জানান, তারা মার্জেলার ডিজাইন অনুকরণ করেননি, বরং একই ধরনের ভাষা ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন।
সংগ্রহটির পোশাকের মধ্যে ছিল একটি সাধারণ টি-শার্ট এবং কালো শর্টস, যা মূলত তাদের ব্র্যান্ডের পরিচিতি বহন করে।
এই টি-শার্টগুলো তৈরি করা হয়েছে অপ্রত্যাশিত বন্যার কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া কাপড় থেকে, যা পরে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।
প্রতিটি টি-শার্টের সামনে বড় একটি লেবেল লাগানো ছিল।
এই সাধারণ পোশাকের পেছনের আকর্ষণ ছিল বিশেষ কিছু পোশাক, যেমন – কুঁচকানো হাতাওয়ালা একটি ব্লেজার, যা র্যাম্পে উন্মোচিত হয়ে এক ভিন্ন আবহ তৈরি করে।
এছাড়াও ছিল বিভিন্ন ধরনের স্তরযুক্ত প্যান্ট এবং শার্টের ডিজাইন।
প্রতিটি পোশাক, যা কোনো না কোনোভাবে বাতিল হওয়া কাপড় থেকে তৈরি করা হয়েছে, তার নিজস্ব একটা গল্প আছে।
ডিজাইনার বিরাগি জানান, তারা কিছু মৌলিক পোশাকের জন্য একটি বিশেষ ‘রেসিপি’ তৈরি করেছেন।
উদাহরণস্বরূপ, তিনি যে ‘সিয়ামিজ টি-শার্ট’ পরেছিলেন, সেটি তৈরি করা হয়েছিল দুটি টি-শার্ট দিয়ে।
একটি টি-শার্টের অংশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পোশাকের পাশ ও হাতার অংশ, অন্যটি দিয়ে সামনের ও পেছনের অংশ।
তাদের মূল লক্ষ্য হলো এমন কিছু স্বতন্ত্র পোশাক তৈরি করা, যা একইসঙ্গে ব্র্যান্ডের পরিচিতি বহন করে এবং প্রতিটি পোশাকের নিজস্বতা বজায় রাখে।
বোত্তের মতে, তাদের ক্রেতারা সাধারণত বিশেষ ধরনের পোশাক পছন্দ করেন, যারা ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে যেতে চান না, বরং স্বতন্ত্র থাকতে ভালোবাসেন।
ফ্যাশন বিশ্বে পরিবেশবান্ধব পোশাকের ধারণা এখন বেশ জনপ্রিয়। এই ধরনের পোশাক তৈরির মাধ্যমে একদিকে যেমন পুরনো কাপড়ের পুনর্ব্যবহার নিশ্চিত করা যায়, তেমনি ফ্যাশনের ক্ষেত্রেও আসে নতুনত্ব।
বাংলাদেশের পোশাক শিল্পেও এই ধরনের ধারণার প্রয়োগ দেখা যায়, যেখানে পুরোনো কাপড় থেকে নতুন পোশাক তৈরি করা হচ্ছে এবং যা ক্রেতাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস