জাম্বিয়ার পটভূমিতে নির্মিত ‘অন বিকামিং আ গিনি ফাউল’ চলচ্চিত্রটি ২০২৩ সালের অন্যতম আলোচিত সিনেমা হিসাবে সিনেমাপ্রেমীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
রুঙ্গানো নুনির পরিচালনায় নির্মিত এই সিনেমাটি একটি শোকানুষ্ঠানের গল্প নিয়ে গঠিত, যেখানে পরিবারের গোপনীয়তা, ঐতিহ্য, এবং ক্ষমতার জটিল আখ্যান ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
সিনেমাটি ইতোমধ্যে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে এবং সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে।
সিনেমাটির মূল চরিত্র শুলার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সুজান চার্ডি।
গল্পের শুরুটা বেশ অপ্রত্যাশিত, যেখানে দেখা যায় শুলার চাচা ফ্রেডের মৃতদেহ গ্রামের রাস্তায় পড়ে আছে।
তবে এই দৃশ্য দেখে শুলার মধ্যে কোনো শোকের চিহ্ন দেখা যায় না।
বরং, রহস্যময় এক নীরবতা যেন তাকে গ্রাস করে।
গল্পের এই অংশ থেকেই বোঝা যায়, এটি একটি সাধারণ গল্পের সিনেমা নয়।
শুলার এই নির্লিপ্ততা দর্শকদের কৌতূহল আরও বাড়িয়ে তোলে।
সিনেমাটি মূলত একটি পরিবারের শোকানুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
জাম্বিয়ার একটি বেম্বা পরিবারের প্রথা ও রীতিনীতিগুলো এখানে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
নারীরা সংসারের যাবতীয় কাজ করে, খাবার তৈরি করে এবং পুরুষদের সেবা করে।
এক পর্যায়ে, ফ্রেডের সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে পরিবারে কলহ সৃষ্টি হয় এবং তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
সিনেমাটিতে পারিবারিক গোপনীয়তা এবং নারীর প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির একটি শক্তিশালী চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
ফ্রেডের মৃত্যুর পর তার অতীত জীবনের কিছু গোপন কথা, বিশেষ করে নারীদের প্রতি তার নিপীড়নের ঘটনাগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে শুরু করে।
সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই বিষয়গুলো ধামাচাপা দিতে চান, কারণ তারা তাদের সম্মান ও পরিবারের ভাবমূর্তি রক্ষার চেষ্টা করেন।
শুলার বাবা যখন তাকে সত্যি কথা বলতে বলেন, তখন তিনি যেন এক গভীর সংকটে পড়েন।
সিনেমাটি দর্শককে গভীর চিন্তায় ফেলে দেয়, যেখানে ঐতিহ্য আর সংস্কারের নামে চলা অন্যায়গুলো উন্মোচিত হয়।
নারীদের প্রতি সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, তাদের অধিকার এবং পরিবারের গোপনীয়তা—এসব বিষয় অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
‘অন বিকামিং আ গিনি ফাউল’ সিনেমাটি শেষ হয় এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়ে।
পরিচালক রুঙ্গানো নুনির শৈলী এবং ক্যামেরার কাজ দর্শকদের মুগ্ধ করে।
সিনেমাটির বিষয়বস্তু, নির্মাণশৈলী এবং শক্তিশালী অভিনয় দর্শকদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে।
যারা ভিন্ন ধারার সিনেমা দেখতে ভালোবাসেন, তাদের জন্য এই সিনেমাটি একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।
সিনেমাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৩ সালে মুক্তি পায় এবং এর ব্যাপ্তি ৯৫ মিনিট।
মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশন (MPA)-এর পক্ষ থেকে সিনেমাটিকে PG-13 রেটিং দেওয়া হয়েছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস