1. rajubdnews@gmail.com : adminb :
  2. babu.repoter@gmail.com : Babu : Nurul Huda Babu
June 26, 2025 1:59 PM
সর্বশেষ সংবাদ:
৩ বছরের শিশুর বন্দুকের গুলিতে যুবকের মৃত্যু: কিভাবে ঘটল এই ভয়ংকর ঘটনা? লিসা’র প্রেমিক জডি’র আসল রূপ ফাঁস! বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন লারসা নজরকাড়া! টেইলর সুইফটের সাথে ট্র্যাভিস কেলসের অন্তরঙ্গ নাচ, ভাইরাল ভিডিও! ছোট বাথরুমের জিনিসপত্র: স্টোরেজ ক্যাবিনেটে ৪৬% ছাড়! স্বামীকে নিয়ে স্ত্রীর চরম আপত্তি! রাতের এই ঘটনা শুনে হতবাক সবাই মাত্র $18-এ! ৬ মাইল হাঁটার জুতা! Amazon-এ বিশাল অফার, এখনই দেখুন! বিচ্ছেদের ২ সপ্তাহ পর: প্রাক্তন স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্কট উলফের বিস্ফোরক পদক্ষেপ! মৃত্যুর আগে নিজেই মৃত্যুর ঘোষণা, স্তব্ধ সকলে!… মাছ বন্ধ থাকায় কাপ্তাই লেকে কয়েক হাজার জেলে নৌকা মেরামত কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে  ১.৪ বিলিয়নের স্বপ্ন: প্রথম ভারতীয়ের মহাকাশ যাত্রা!

যুদ্ধজয়ী এরিট্রিয়ার শেফের তুলিতে জীবনের গল্প, মৃত্যুর পরেও আলো ছড়াচ্ছে!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট হয়েছে : Wednesday, March 12, 2025,

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে পালিয়ে আসা এক শিল্পী, যিনি মৃত্যুর পর জয় করেছেন বিশ্ব। এরিট্রিয়ার শিল্পী ফিকরে ঘেব্রেয়েসুস-এর জীবন ছিল সংগ্রাম আর সাফল্যের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মাত্র ১৬ বছর বয়সে যুদ্ধ থেকে বাঁচতে দেশ ছাড়তে হয় তাকে, এরপর ১৯৮১ সালে পা রাখেন যুক্তরাষ্ট্রে। তার ক্যানভাসে সবসময় ফুটে উঠত জন্মভূমি, নিজের শিকড়ের প্রতি গভীর টান এবং উদ্বাস্তু জীবনের গল্প।

ফিকরে ঘেব্রেয়েসুস-এর জন্ম হয় ১৯৬২ সালে, এরিট্রিয়ার রাজধানী আসমারায়। এর এক বছর আগে ইথিওপিয়ার বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। শৈশবে যুদ্ধ আর অস্থিরতার মধ্যে বেড়ে ওঠা এই শিল্পী সবসময় খুঁজে ফিরেছেন নিজের শেকড়কে। যদিও কৈশোরের পর আর এরিট্রিয়াতে ফেরা হয়নি, তবুও তার শিল্পকর্মে বারবার এসেছে এই অঞ্চলের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য আর ইতিহাসের নানা অনুষঙ্গ। আসমারার চার্চ ও মসজিদের ইসলামিক ও কপ্টিক শিল্পকলা, প্রাচীন যুগের পাথরের চিত্র, ইতালীয় স্থাপত্যশৈলী—এসব কিছুই তার ছবিতে প্রভাব ফেলেছে। এমনকি ইথিওপিয়ার তৎকালীন স্বৈরশাসক মೆಂঙ্গিসতু হাইলে মারিয়াম-এর শাসনের সময়কার ছবিও তার কাজে দেখা যায়।

১৯৭৮ সালে সৈন্যদের কারণে স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে, ফিকরে এরিট্রিয়ান প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মা তাকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সুদান হয়ে ইতালি ও জার্মানির পথ ধরেন। অবশেষে ১৯৮১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছান। উদ্বাস্তু জীবনের যন্ত্রণা, এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ছুটে চলা—এসব বিষয় তার ছবিতে ভিন্ন রূপে ধরা দিয়েছে। গভীর রাতে চাঁদের আলোয় আলোকিত পাহাড়ের দৃশ্য, একটি তাঁবু আর আগুনের পাশে বসে থাকা দুই ব্যক্তির ছবি—এগুলো যেন স্মৃতির ক্যানভাসে আঁকা এক একটি স্বপ্ন।

নৌকা ছিল তার প্রিয় একটি মোটিফ। নৌকার গোল আকার, যা মানুষের শরীরের মতো—এগুলো এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার প্রতীক হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন। যেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে, এক মানসিক অবস্থা থেকে আরেক অবস্থায় উত্তরণের ইঙ্গিত।

যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর তিনি প্রথমে নিউইয়র্কে এবং পরে কানেকটিকাটে বসবাস করতে শুরু করেন। একইসঙ্গে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্টে কাজ করতেন, পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন এবং এরিট্রিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি ‘আর্ট স্টুডেন্টস’ লিগ’ থেকে চিত্রকলার ওপর পড়াশোনা করেন, যা অনেক অ্যাবস্ট্রাক্ট শিল্পী তৈরি করেছে। ১৯৯২ সালে তিনি দুই ভাইয়ের সঙ্গে মিলে ‘কাফে আডুলিস’ নামে একটি জনপ্রিয় রেস্টুরেন্ট খোলেন। সেখানেই তিনি এলিজাবেথ আলেকজান্ডারের সঙ্গে পরিচিত হন, যিনি পরবর্তীতে তার জীবনসঙ্গিনী হন। এলিজাবেথ ছিলেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। বিয়ের এক সপ্তাহের মধ্যে তাদের বাগদান হয় এবং তাদের দুই সন্তান হয়—সোলোমন ও সাইমন।

এরপর তার শিল্পকর্মে রঙের ব্যবহারেও পরিবর্তন আসে। জীবনের এই সময়ে এসে তিনি পরিবার-কেন্দ্রিক একটি জগৎ তৈরি করতে পেরেছিলেন, যা তাকে অনেক সাহস জুগিয়েছিল। এলিজাবেথ আলেকজান্ডার বলেন, ফিকরে ছিলেন “একজন আবেগপ্রবণ ও নিবেদিতপ্রাণ বাবা।”

২০০৮ সালে ইয়েল থেকে ফাইন আর্টসে মাস্টার্স সম্পন্ন করার পর ফিকরে পুরোদমে শিল্পচর্চা শুরু করেন। তিনি একসঙ্গে অনেকগুলো ক্যানভাসে কাজ করতেন, যার প্রতিটিতেই থাকত সঙ্গীতের প্রভাব। বিশেষ করে, তিনি ‘Thelonious Monk’ এবং ‘Ali Farka Touré’-এর গান শুনতেন। তার ক্যানভাসে জ্যাজ সুরের প্রভাবও দেখা যায়।

২০১২ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৫০ বছর বয়সে ফিকরে ঘেব্রেয়েসুসের আকস্মিক মৃত্যু হয়। তার জীবদ্দশায় ছবিগুলো সেভাবে পরিচিতি না পেলেও, মৃত্যুর পর বিশ্বজুড়ে তার কাজের কদর বাড়ে। ২০২২ সালের ভেনিস বিয়েনাল-এ তার শিল্পকর্ম প্রদর্শিত হয়। এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রেও বেশ কয়েকটি প্রদর্শনী হয়েছে। বর্তমানে লন্ডনের ‘মডার্ন আর্ট’ গ্যালারিতে তার প্রথম একক ইউরোপীয় প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে, যেখানে নব্বইয়ের দশক থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত আঁকা ২৫টি ছবি স্থান পাবে।

প্রদর্শনীটি মূলত এরিট্রিয়ান প্রবাসীদের জন্য একটি বিশেষ আয়োজন, যেখানে উদ্বাস্তু জীবনের বেদনা, প্রিয়জনদের জন্য আকুতি এবং স্বদেশের প্রতি ভালোবাসার চিত্র ফুটে উঠবে। ফিকরে ঘেব্রেয়েসুসের কাজগুলো কেবল একটি দেশের সীমানায় আবদ্ধ নয়, বরং এটি বিশ্বজুড়ে মানুষের আবেগ ও অনুভূতির প্রতিচ্ছবি।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2019 News 52 Bangla
Theme Customized BY RASHA IT