ব্রিটিশ-ভারতীয় পরিচালক কারান কান্ধারীর নতুন ছবি ‘সিস্টার মিডনাইট’ মুক্তি পেতে চলেছে, যেখানে মুম্বাই শহরের প্রেক্ষাপটে এক নববধূর জীবনের গল্প ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
কান চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রদর্শিত হয়েছে এবং বাফটা-র (BAFTA) সেরা নবাগত ব্রিটিশ পরিচালক অথবা লেখকের পুরস্কারের জন্য মনোনয়নও পেয়েছে।
ছবিটি মূলত একটি কাল্পনিক কমেডি ঘরানার, যেখানে দেখা যায়, উমা নামের এক তরুণীর (অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে) সঙ্গে এক অচেনা পুরুষের (অভিনেতা অশোক পাঠক) বিয়ে হয়।
বিয়ের পর সে মুম্বাই শহরে আসে এবং শ্বশুরবাড়ির পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
একঘেয়েমি আর একাকিত্বের মধ্যে, সে ধীরে ধীরে সমাজের চিরাচরিত ধারণার বাইরে, নিজের ভেতরের অন্য এক সত্ত্বার সন্ধান পেতে শুরু করে।
পরিচালক কান্ধারী জানান, ছবিটি বানানোর মূল ধারণা এসেছিল সমাজের কিছু প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্ন করার ভাবনা থেকে।
তিনি বলেন, “জীবনে বাঁচার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই, যদিও সমাজ আমাদের সেভাবে ভাবতে শেখায়।
একজন নারী, একজন পুরুষ, একজন স্বামী বা স্ত্রী – এই পরিচয়গুলোর কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম নেই।”
কান্ধারীর মতে, ছবিটি আসলে এক ধরণের ‘পাঙ্ক রক’, যা পুরনো ধ্যান-ধারণাগুলোকে নতুন করে দেখতে শেখায়।
ছবিতে মুম্বাই শহরের রাতের জীবনকে খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
পরিচালক বলেন, “মুম্বাইয়ের চরিত্রটি গল্পের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
দিন ও রাতের শহরের ভিন্ন রূপ ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে।”
ছবিতে একদিকে যেমন বাঙালি লোকসংগীতের ব্যবহার রয়েছে, তেমনই রয়েছে আমেরিকান পাঙ্ক ও ব্লুজের ছোঁয়া।
কাজের ক্ষেত্রে পরিচালক সত্যজিৎ রায়, মার্টিন স্কোরসেসি, বাস্টার কিটনের মতো কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন।
সঙ্গীতের প্রতি তাঁর বিশেষ আগ্রহ রয়েছে, এবং ছবিটির গল্পে এর প্রভাব স্পষ্ট।
ছবিতে জয়েস ডিভিশন ও বব ডিলানের গানের ব্যবহারও দর্শকদের আকৃষ্ট করবে।
ছবিটির প্রধান অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তের কাজের প্রশংসা করে কান্ধারী বলেন, “রাধিকা চরিত্রটির গভীরে প্রবেশ করতে পেরেছিল, যা আমাকে মুগ্ধ করেছে।”
‘সিস্টার মিডনাইট’ ছবিতে হাস্যরস এবং ভয়ের এক মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে, যা দর্শকদের এক ভিন্ন স্বাদের অভিজ্ঞতা দেবে।
ছবিটি ১৪ই মার্চ থেকে সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান