শিরোনাম: ইউটিউব খ্যাতি থেকে কারাবাস: রুবি ফ্রাঙ্কের ভয়ঙ্কর কাহিনী, যা আলোড়ন তুলেছে বিশ্বজুড়ে
সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, খ্যাতি অর্জনের আকাঙ্ক্ষা অনেক পরিবারকে ইউটিউব এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে নিজেদের দৈনন্দিন জীবন ক্যামেরাবন্দী করতে উৎসাহিত করেছে। এই ধরনের একটি পরিবারের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘ডেভিল ইন দ্য ফ্যামিলি: দ্য ফল অফ রুবি ফ্রাঙ্ক’ নামক একটি নতুন তথ্যচিত্র। রুবি ফ্রাঙ্ক নামের এক নারীর জীবনের উত্থান ও পতনের এই কাহিনী বর্তমানে বিশ্বজুড়ে আলোচনার বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের স্প্রিংভিলে বসবাসকারী রুবি ফ্রাঙ্ক এবং তার স্বামী কেভিন মিলে ‘৮ প্যাসেঞ্জারস’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল চালাতেন। তাদের ছয় সন্তানকে নিয়ে সাজানো-গোছানো পরিবারের জীবনযাত্রা ছিল চ্যানেলের মূল বিষয়। ২০১৫ সালে শুরু হওয়া এই চ্যানেল দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে। রুবি এবং কেভিন তাদের সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন ভিডিও তৈরি করতেন, যা দর্শকদের মধ্যে বেশ পরিচিতি লাভ করে। কিন্তু ২০২২ সালে রুবি ফ্রাঙ্ক শিশুদের প্রতি চরম নিষ্ঠুরতা ও নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাকে ৩০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
তথ্যচিত্রে ফ্রাঙ্ক পরিবারের অনলাইন জীবনের আড়ালে থাকা ভয়ংকর দিকগুলো উন্মোচন করা হয়েছে। ডকুমেন্টারিতে দেখা যায়, রুবি ফ্রাঙ্ক তার সন্তানদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। এমনকি সন্তানদের খাবার ও ঘুমের অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হতো। প্রতিবেশী এক শিশুর জবানবন্দি এবং নির্যাতনের শিকার শিশুদের পালিয়ে আসার দৃশ্য দর্শকদের স্তম্ভিত করে।
ডকুমেন্টারিটিতে রুবি ফ্রাঙ্কের সহযোগী জোডি হিল্ডেব্রান্ড নামের এক নারীর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। হিল্ডেব্রান্ড রুবিকে কুসংস্কারাচ্ছন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসে প্রভাবিত করেন এবং সন্তানদের প্রতি কঠোর হতে উৎসাহিত করেন। এই নারীর প্ররোচনায় রুবি ফ্রাঙ্ক শিশুদের সঙ্গে এমন আচরণ করতে শুরু করেন, যা অকল্পনীয়।
‘ডেভিল ইন দ্য ফ্যামিলি’ তথ্যচিত্রে ফ্রাঙ্ক পরিবারের ইউটিউব জীবনের শুরু থেকে রুবি ফ্রাঙ্কের কারাবাস পর্যন্ত ঘটনার বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, যেমন- রুবি ফ্রাঙ্কের স্বামী কেভিন এবং তাদের দুই সন্তান শারি ও চ্যাডের সাক্ষাৎকার দর্শকদের জন্য এই মামলার গভীরে যেতে সাহায্য করে।
ডকুমেন্টারিটি তৈরি করার ক্ষেত্রে নির্মাতারা যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। নির্যাতনের শিকার শিশুদের পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে। তথ্যচিত্রটি রুবি ফ্রাঙ্কের অনলাইন খ্যাতির পেছনের অন্ধকার দিকগুলো তুলে ধরে, যা দর্শকদের বিশেষভাবে নাড়া দেয়। একইসাথে, এটি শিশুদের প্রতি অভিভাবকদের দায়িত্ব এবং ইন্টারনেটের ভালো-মন্দ দিকগুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে উৎসাহিত করে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান