যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যাঞ্চলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে তিনজন নিহত হওয়ার পর দেশটির দক্ষিণ অঞ্চলে আবারও ভয়াবহ টর্নেডোর পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাতের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিসৌরি অঙ্গরাজ্য।
শনিবার আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একই ধরনের আরও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে, যা জীবনহানির কারণ হতে পারে।
মিসৌরিতে শুক্রবার রাতের ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে ওজর্ক কাউন্টি এবং বাটলর কাউন্টি।
বাটলর কাউন্টির পপলার ব্লফে একটি সুপারমার্কেট, কিন্ডারগার্টেন এবং অন্যান্য স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জরুরি বিভাগের কর্মীরা ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের চেষ্টা করছেন এবং ব্ল্যাক রিভার কোলোসিয়ামকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা হয়েছে।
রেড ক্রস জানিয়েছে, তারা উদ্ধার কাজে সহায়তা করবে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, শুক্রবারের আঘাতের পর শনিবার আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, শুক্রবার মধ্য-পশ্চিম এবং দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ২২টি টর্নেডোর খবর পাওয়া গেছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, শনিবার গভীর রাতে আলাবামা এবং মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যে শক্তিশালী টর্নেডো আঘাত হানতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস কেন্দ্র (Storm Prediction Center) এই অঞ্চলের জন্য সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা জারি করেছে।
এই সতর্কতা অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৭৪ মাইলের বেশি হতে পারে, যা ক্যাটাগরি ১ হারিকেনের সমান।
শুধু টর্নেডোই নয়, ওকলাহোমা এবং টেক্সাসের কিছু অংশে শক্তিশালী বাতাস ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়েছে।
ওকলাহোমার জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগ জানিয়েছে, রাজ্যটিতে প্রায় ১৩০টির বেশি স্থানে আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছে।
টেক্সাসের একটি অংশে প্রায় ২৩ হাজার একর জমির ওপর আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, শনিবার সকালে লুইজিয়ানা এবং মিসিসিপি থেকে শুরু করে দিনের শেষে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এই ঝড় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
শনিবার রাতের এই দুর্যোগ আটলান্টাকেও প্রভাবিত করতে পারে।
রাতের বেলা টর্নেডোর কারণে হতাহতের সংখ্যা দিনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে বলে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা এই ঘূর্ণিঝড় এবং টর্নেডোর ঘটনা আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলা এবং সতর্কতামূলক ব্যবস্থার গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেকোনো স্থানে ঘটতে পারে, তাই আগে থেকে প্রস্তুত থাকা জরুরি।
তথ্য সূত্র: সিএনএন