শিরোনাম: দাম্পত্য জীবনে অন্তরঙ্গতার অভাব: সমাধানের পথে মনোবিদের পরামর্শ
একজন ত্রিশোর্ধ্ব নারী, যিনি বিগত ছয় বছর ধরে বিবাহিত জীবন অতিবাহিত করছেন, তাঁর দাম্পত্য জীবনে অন্তরঙ্গতার অভাব এক গভীর সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। স্বামীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ হলেও, যৌন জীবনের ক্ষেত্রে রয়েছে বিস্তর ফারাক।
স্বামীর তীব্র যৌন আকাঙ্ক্ষা থাকলেও, স্ত্রীর অতীতে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনার কারণে যৌন চাহিদা তুলনামূলকভাবে কম। ফলে, দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসার গভীরতা থাকলেও, শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক ধরণের শূন্যতা বিরাজ করছে। স্ত্রী কখনোই এই বিষয়ে আগ্রহ দেখান না, বরং সবসময় স্বামীকেই এই বিষয়ে এগিয়ে আসতে হয়।
এই পরিস্থিতিতে, ওই নারী তাঁর বিবাহিত জীবন টিকিয়ে রাখতে চাইলেও, শারীরিক সম্পর্কের এই একঘেয়েমি তাঁকে হতাশ করে তোলে। তিনি চান, তাঁর প্রতি কেউ আকৃষ্ট হোক, ভালোবাসার প্রকাশ ঘটুক।
এই ধরনের মানসিক অবস্থায়, তাঁর কর্মক্ষেত্রে পরিচিত একজনের প্রতি আকর্ষণ জন্মায়, যা এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এই সময় তিনি অন্য কারো সাথে শারীরিক সম্পর্কের কথা কল্পনা করতে শুরু করেন। যদিও বর্তমানে তিনি সেই সম্পর্ক থেকে নিজেকে সরিয়ে এনেছেন, তবুও তিনি অনুভব করেন, অন্য কারো সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা তাঁর জন্য কতটা জরুরি।
এই পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কিভাবে কথা বলবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। তিনি চান, বিবাহিত জীবন বজায় রেখেও, অন্য কারো সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে। কিন্তু, গোপনে অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে যে মানসিক কষ্ট তৈরি হবে, সেই বিষয়ে তিনি অবগত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের সমস্যা বর্তমানে অনেক দাম্পত্য সম্পর্কেই দেখা যায়। এক্ষেত্রে, সঙ্গীর মধ্যে যৌন চাহিদার ভিন্নতা একটি প্রধান কারণ।
এই সমস্যা সমাধানে সবার আগে প্রয়োজন খোলামেলা আলোচনা। এক্ষেত্রে, স্ত্রীকে তাঁর অতীতের আঘাতগুলো কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে হবে এবং তাঁদের সম্পর্কের উন্নতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
মনোবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, এই পরিস্থিতিতে স্ত্রীর মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের জন্য থেরাপি (therapy) খুবই উপযোগী হতে পারে। প্রয়োজনে, যুগল থেরাপিরও (couples therapy) ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
এই আলোচনার শুরুতে, স্ত্রীকে বোঝানো প্রয়োজন যে, তিনি তাঁকে ভালোবাসেন এবং বিবাহিত জীবন টিকিয়ে রাখতে চান। সম্পর্কের উন্নতির জন্য তাঁর এই প্রচেষ্টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মনোবিদ পামেলা স্টিফেনসন কনেলি (Pamela Stephenson Connolly) এই ধরনের সমস্যা সমাধানে বিশেষজ্ঞ। তিনি মনে করেন, এই ধরনের সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। এছাড়াও, প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
যদি কোনো দম্পতি তাঁদের দাম্পত্য জীবনের সমস্যা নিয়ে মনোবিদের পরামর্শ নিতে চান, তবে তাঁরা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান