জাপানের এক ব্যক্তি, যিনি দীর্ঘকাল ধরে মৃত্যুদণ্ডের আসামি হিসেবে ছিলেন, অবশেষে মুক্তি পাওয়ার পর ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিশাল অংকের টাকা পেলেন। ইওয়াও হাকামাদা নামক এই ব্যক্তির জীবন কেটেছে প্রায় অর্ধ-শতাব্দী ধরে, যার প্রায় পুরোটাই ছিল মৃত্যুর প্রতীক্ষায়।
অবশেষে, আদালত তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেন এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের নির্দেশ দেন।
১৯৬৬ সালে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হাকামাদাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এরপর দীর্ঘ সময় ধরে তিনি কারাবন্দী ছিলেন, যার মধ্যে কয়েক দশক কেটেছে ডেথ রো-তে, অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের জন্য নির্ধারিত কক্ষে।
তার বোন এবং অন্যান্য শুভাকাঙ্ক্ষীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে অবশেষে তিনি মুক্তি পান।
আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, হাকামাদার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ ছিল দুর্বল এবং পুলিশের পক্ষ থেকে তথ্যের সঙ্গে কারচুপি করা হয়েছিল। সেই সময়ে, হাকামাদার কাছ থেকে একটি স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছিল, যা পরে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
এই মামলার শুনানিতে শিজুওকা জেলা আদালত জানায় যে, ক্ষতিপূরণ হিসেবে হাকামাদাকে ২১৭,৩৬২,৫০০ ইয়েন দিতে হবে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৬ কোটি টাকার সমান।
হাকামাদার আইনজীবী দল জানিয়েছেন, এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ তার দীর্ঘদিনের মানসিক কষ্টের তুলনায় খুবই সামান্য। তারা বলছেন, মৃত্যুদণ্ডের ঝুঁকির মধ্যে দীর্ঘদিন বন্দি থাকার কারণে হাকামাদার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব পড়েছে।
তিনি এখন প্রায় ‘কল্পনার জগতে’ বাস করেন।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে মৃত্যুদণ্ডের সাজা পাওয়া আসামিদের মধ্যে হাকামাদা পঞ্চম ব্যক্তি, যিনি পুনরায় বিচারের সুযোগ পেয়েছিলেন এবং নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। এর আগে মুক্তি পাওয়া অন্য চারজনের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান