উত্তর ক্যারোলিনার এক বাসিন্দা ম্যাথিউ রজার্স, যিনি একটি রেস্টুরেন্টের মালিক, সম্প্রতি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এই অগ্নিকাণ্ডে তাঁর পরিবারের বহু স্মৃতি বিজড়িত ‘ক্যাবিন অফ হোপ’ সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত হয়ে গেছে।
হ্যারিকেন হেলেনের কারণে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর, এই কুটিরটি তাঁর পরিবারের কাছে আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল।
প্রায় চল্লিশ বছর আগে ফ্ল্যাট রকের একটি লেকের ধারে এই কুটিরটি তৈরি হয়। রজার্স জানান, এটি তাঁদের পরিবারের জন্য শান্তি ও আশার প্রতীক ছিল।
গত বছর হ্যারিকেন হেলেনের কারণে সৃষ্ট বন্যায় যখন তাঁর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী কোনোমতে প্রাণে বাঁচেন। এরপর তাঁরা কিছুদিনের জন্য তাঁর ‘থ্রি চপ্ট স্যান্ডউইচ শপ’ নামের রেস্টুরেন্টের বেসমেন্টে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
রজার্স সব সময়ই ইতিবাচক মানসিকতার মানুষ। তিনি বলেন, “জীবন একটি চলমান প্রক্রিয়া, এবং এটি আমাদের জীবনের একটি অধ্যায় মাত্র।”
অগ্নিকাণ্ডের কয়েকদিন আগে, মেরামতের পর কুটিরটির দিকে যাওয়ার রাস্তাটি আবার খুলে দেওয়া হয়। রজার্স এবং তাঁর স্ত্রী সেখানে গিয়ে দেখেন, ঘরটি তখনও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।
তাঁরা ঘরটি পরিষ্কার করেন এবং সেখানে কিছুটা সময় কাটান। কিন্তু কে জানত, এর কয়েকদিনের মধ্যেই এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে!
স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডের সময় তাঁরা কেবল একটি সিনসিনাটি রেড্স-এর পতাকা উদ্ধার করতে পেরেছেন। রজার্স জানান, তিনি এই পতাকাটি তাঁর বাড়ির উঠানে লাগিয়েছিলেন, যা নতুন বেসবল মৌসুমের সূচনাকে চিহ্নিত করে।
আগুনে তাঁর পরিবারের বহু মূল্যবান জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তাঁর দাদার সংগ্রহ করা একটি মশলার বাক্স, ১৯৪৯ সালের পুরনো তাস, যা দিয়ে তিনি ছোটবেলায় পোকার খেলতেন, এমন অনেক কিছুই তিনি হারিয়েছেন।
এমনকি তাঁর স্ত্রীর সারা জীবনের সঞ্চয়ও এই আগুনে শেষ হয়ে গেছে।
এই শোকের মধ্যেও রজার্স তাঁর ৮৭ বছর বয়সী চাচার কাছ থেকে পাওয়া একটি খবরে কিছুটা স্বস্তি খুঁজে পান। তাঁর চাচা জানান, তিনি এক বছর আগে কুটিরে বেড়াতে গিয়ে রজার্সের বাবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি স্ক্র্যাপবুকের ছবি তুলে রেখেছিলেন।
রজার্সের জন্য ‘ক্যাবিন অফ হোপ’ ছিল একটি আশ্রয়স্থল, যেখানে তিনি তাঁর পরিবারের সঙ্গে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, শীঘ্রই তিনি এই কুটিরটি পুনর্নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছেন। তাঁর ভাষায়, “এই সম্পত্তি আরোগ্য লাভের প্রতীক।
রেস্টুরেন্ট পরিচালনার পাশাপাশি, রজার্স তাঁর ‘ক্যাম্প হোপউড’ নামে একটি ডে-ক্যাম্প পুনরায় চালু করারও আশা রাখেন, যেখানে তিনি ছোটবেলার মতো শিশুদের জন্য সুন্দর অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করতে চান।
তথ্য সূত্র: সিএনএন