অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা স্টিভ ম্যাকুইন জানিয়েছেন, তাঁর বাবার প্রস্টেট ক্যানসারে মৃত্যুর ঘটনাটি যেন তাঁর জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছে। এই দুঃসংবাদ তাঁকে রোগ সম্পর্কে সচেতন করে তুলেছিল, যার ফলস্বরূপ তিনি নিজের শরীরে বাসা বাঁধা ক্যান্সার সম্পর্কে জানতে পারেন এবং দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে সক্ষম হন।
প্রস্টেট ক্যানসার পুরুষদের মধ্যে একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, যা সম্পর্কে সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। ম্যাকুইন-এর বাবার মৃত্যুর পর তিনি নিজে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, তাঁর বাবার মৃত্যুর কারণ ছিল এই রোগ। এই ঘটনার পরই তিনি জানতে পারেন, বংশগতভাবে এই রোগের ঝুঁকি কতটা বেশি।
সাধারণত, প্রতি আট জন পুরুষের মধ্যে একজনের প্রস্টেট ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্যানসার শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে, কিন্তু অনেক পুরুষ, বিশেষ করে সমাজের কিছু বিশেষ স্তরের পুরুষদের মধ্যে সচেতনতার অভাব দেখা যায়। যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর ১২,০০০ এর বেশি পুরুষ এই রোগে মারা যান। ম্যাকুইন মনে করেন, সচেতনতার মাধ্যমেই এই সংখ্যা কমানো সম্ভব।
চিকিৎসকরা বলছেন, সাধারণত রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। ম্যাকুইনের ক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছিল। কোনো উপসর্গ ছাড়াই তাঁর শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়েছিল। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমেই এটি সম্ভব হয়েছে।
চিকিৎসকরা আরও জানান, প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা—এসব বিষয় রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পুরুষদের মধ্যে স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আরও বেশি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে, স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রচার এবং স্ক্রিনিং প্রোগ্রামগুলো সমাজের সকল স্তরের মানুষের কাছে সহজলভ্য করতে হবে।
স্টিভ ম্যাকুইন-এর এই অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা এবং রোগ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকলে, অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব। তাই, স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো রকম দ্বিধা বা সংকোচ না করে, চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান