গরমে ত্বকের সুরক্ষার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার এক নতুন দিক উন্মোচন হয়েছে। রোদ থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিন (Sunscreen) ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি।
কিন্তু বাজারে প্রচলিত কিছু সানস্ক্রিনে এমন রাসায়নিক উপাদান থাকে যা আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এবং একইসঙ্গে সমুদ্রের পরিবেশের ক্ষতি করে, বিশেষ করে প্রবাল প্রাচীর বা কোরাল রিফের (Coral Reef) জীবনযাত্রার উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
তাই এখন প্রয়োজন এমন সানস্ক্রিন বেছে নেওয়া যা একদিকে আমাদের ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে বাঁচাবে, অন্যদিকে পরিবেশের ক্ষতিও করবে না। এই ধরনের সানস্ক্রিনকে ‘রিফ-সেফ’ (Reef-safe) বা ‘প্রবাল-বান্ধব’ সানস্ক্রিন বলা হয়।
সাধারণ সানস্ক্রিনে ‘অক্সি বেনজোন’ (Oxybenzone) এবং ‘অকটিনক্সিট’ (Octinoxate)-এর মতো রাসায়নিক উপাদান থাকে। হাওয়াই, আরুবা এবং কী ওয়েস্টের মতো কিছু জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত অঞ্চলে এই উপাদানযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, কারণ এগুলো কোরালের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
এছাড়াও, এই রাসায়নিক উপাদানগুলো মানুষের শরীরে হরমোনের কার্যকারিতাতেও ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই, ত্বক ও পরিবেশ—উভয়ের সুরক্ষায় রিফ-সেফ সানস্ক্রিনের গুরুত্ব বাড়ছে।
তাহলে, একটি ভালো রিফ-সেফ সানস্ক্রিনের বৈশিষ্ট্য কী হওয়া উচিত?
বাজারে এখন বিভিন্ন রিফ-সেফ সানস্ক্রিন পাওয়া যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ‘ব্লু লিজার্ড সেনসিটিভ মিনারেল সানস্ক্রিন এসপিএফ ৫০+’ (Blue Lizard Sensitive Mineral Sunscreen SPF 50+) একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।
এছাড়াও, ‘থিংকস্পোর্ট এসপিএফ ৫০ মিনারেল সানস্ক্রিন’ (Thinksport SPF 50 Mineral Sunscreen) এবং ‘স্কিনস্যুট ফেইস’ (SkinSuit Face) -এর মতো কিছু ব্র্যান্ডও এখন জনপ্রিয় হচ্ছে।
রিফ-সেফ সানস্ক্রিন ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা একদিকে যেমন আমাদের ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে রক্ষা করতে পারি, তেমনইভাবে সমুদ্রের পরিবেশ এবং কোরাল রিফ-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষাতেও অবদান রাখতে পারি।
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রা এবং জীববৈচিত্র্যের জন্য সমুদ্র ও এর পরিবেশকে রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। তাই, সানস্ক্রিন কেনার সময় সচেতন হোন এবং পরিবেশ-বান্ধব বিকল্প বেছে নিন।
তথ্য সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক