শিরোনাম: যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনা: ট্রাম্পের দাবিকে নস্যাৎ করে আলোচনার নতুন পথে তেহরান
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা শুরুর প্রাক্কালে তেহরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই আলোচনা সরাসরি হবে না, বরং পরোক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচনার ঘোষণা দিলেও, ইরান জানিয়েছে তাদের অবস্থান ভিন্ন।
ওমানের মাটিতে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তেহরান জানিয়েছে, তারা এখনো সরাসরি আলোচনার ব্যাপারে প্রস্তুত নয়।
যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যেকার এই আলোচনা কয়েক সপ্তাহ ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং ট্রাম্পের আলোচনার ঘোষণা, উভয়ই ইরানের উপর আলোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
যদিও তেহরানের পক্ষ থেকে আলোচনার বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করা হয়নি, তবে তারা ইঙ্গিত দিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রস্তাব তারা পায়নি।
আলোচনার মূল বিষয়গুলো হলো- ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ভবিষ্যৎ, দেশটির ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম এবং তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি।
ইরানের পক্ষ থেকে বরাবরই তাদের পারমাণবিক কার্যক্রমকে শান্তিপূর্ণ এবং বৈধ হিসেবে দাবি করা হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবও তাদের এই দাবির প্রতি সমর্থন জুগিয়েছে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্র চাইছে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি পুরোপুরিভাবে নির্মূল করতে, যা ‘Libya option’ নামে পরিচিত।
আলোচনায় দুই পক্ষের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চায়, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির উপর নতুন করে নজরদারি ব্যবস্থা চালু করতে।
অন্যদিকে, ইরান তাদের বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচির উপর কোনো রকম সীমাবদ্ধতা আনতে রাজি নয়।
ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা কোনো আলোচনাতেই রাজি হবে না, যা তাদের উপর কোনো ধরনের সীমাবদ্ধতা তৈরি করে।
ইরানের পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে, আলোচনার ধরন সরাসরি হোক বা পরোক্ষ, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং, আলোচনার ফলপ্রসূতা, দুই পক্ষের আন্তরিকতা এবং একটি সমাধানে পৌঁছানোর ইচ্ছাই আসল বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এই আলোচনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। অন্যদিকে, ইরানের পক্ষে রয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি।
তবে, এই আলোচনা কত দিন চলবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের হাতে বর্তমানে ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের যে বিশাল মজুদ রয়েছে, তা তাদের দ্রুত অস্ত্র- grade ইউরেনিয়াম তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা ফলপ্রসূ হয় কিনা, সেদিকেই এখন সকলের নজর।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান