যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে বন্দী বিনিময়ের মাধ্যমে কয়েকজনের মুক্তি মিলেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে (United Arab Emirates – UAE) অনুষ্ঠিত এই বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ান নাগরিক ক্সেনিয়া কারেলিনা এবং জার্মান-রাশিয়ান ব্যবসায়ী আর্থার পেত্রভ মুক্তি লাভ করেন।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কারেলিনার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, কারেলিনাকে গত বছর রাশিয়ায় আটক করা হয়। তিনি ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য একটি মার্কিন দাতব্য সংস্থায় ৫২ ডলার দান করেছিলেন, যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়।
এটিকে মার্কিন কর্তৃপক্ষ ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছে।
অন্যদিকে, আর্থার পেত্রভকে যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি অবৈধভাবে রাশিয়ার কাছে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য মাইক্রোইলেকট্রনিকস পাচার করেছেন।
রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা (এফএসবি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। পেত্রভকে ২০২৩ সালে সাইপ্রাসে গ্রেফতার করা হয় এবং পরে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসা হয়।
সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে তারের মাধ্যমে প্রতারণা ও অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর পরিচালক জন র্যাটক্লিফ এবং একজন শীর্ষস্থানীয় রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা আবুধাবিতে এই বন্দী বিনিময়ের আলোচনা করেন।
র্যাটক্লিফ সাংবাদিকদের বলেন, “আজ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশিয়া থেকে অন্যায়ভাবে আটক হওয়া আরেকজন আমেরিকানকে ফিরিয়ে এনেছেন। এই প্রচেষ্টায় নিরলসভাবে কাজ করা সিআইএ কর্মকর্তাদের জন্য আমি গর্বিত এবং আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞ।”
এটি গত আগস্ট মাস থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে হওয়া তৃতীয় উচ্চ পর্যায়ের বন্দী বিনিময়। একইসাথে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি দ্বিতীয় ঘটনা।
রাশিয়া সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা করা ট্রাম্প এর আগে আমেরিকান শিক্ষক মার্ক ফোগেলের মুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক উষ্ণ হচ্ছে, তবুও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার বিষয়ে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতি এখনো পূরণ হয়নি।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনো পর্যন্ত ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন, যেখানে কোনো শর্ত ছাড়াই যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছিল।
কৃষ্ণ সাগরে আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবের জন্য পশ্চিমের কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্ত দিয়েছেন পুতিন।
বৃহস্পতিবার তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার প্রতিনিধি দল দূতাবাসগুলোর কার্যক্রম পুনরায় চালুর বিষয়ে আলোচনা করতে মিলিত হয়েছিলেন।
তবে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস জানিয়েছেন, এই বৈঠকে ইউক্রেন বিষয়টি আলোচনার জন্য ছিল না।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা