মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। বুধবার তিনি বেশ কিছু দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক স্থগিত করেন, যা শেয়ার বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন আনে।
এই ঘটনার পর ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বাজারের কারসাজির অভিযোগ এনেছেন এবং এর তদন্তের দাবি তুলেছেন।
জানা গেছে, ট্রাম্প তার প্রশাসনের বাণিজ্যনীতির অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এর কয়েকদিন পরেই তিনি এই শুল্ক স্থগিত করেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শেয়ার বাজার সূচকগুলোতে বড় ধরনের উত্থান হয়, যা বিশ্বযুদ্ধের পর একদিনের সবচেয়ে বড় উল্লম্ফনগুলোর মধ্যে অন্যতম। তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্পের আমলে বাজারের যে উচ্চতা ছিল, এখনো সেই তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ নিচে রয়েছে বাজার।
ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ, ট্রাম্প বাজারের এই অস্থিরতাকে কাজে লাগিয়েছেন। তাদের ধারণা, প্রথমে শুল্ক আরোপ করে বাজারকে নিচে নামানো হয়, এরপর স্থগিত করার ঘোষণার মাধ্যমে যারা শেয়ার কিনেছিল, তাদের লাভবান হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।
এই অভিযোগের পর ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট সিনেটর অ্যাডাম শিফ এক টুইটে বলেছেন, “নীতির এই পরিবর্তনে ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের সুযোগ তৈরি হয়েছে।”
অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা ট্রাম্পের পক্ষ নিয়ে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে সমালোচকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে এবং বাজারের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্ক আরোপ ও স্থগিতের এই সিদ্ধান্তের ফলে বাজারের ওঠা-নামা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সুযোগ তৈরি করে। যারা ট্রাম্পের ঘোষণার পরে শেয়ার কিনেছিলেন, তারা লাভবান হয়েছেন।
আবার, যারা বাজার পতনের সময় তাদের সম্পদ বিক্রি করেছিলেন, তারা ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
তবে এই শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত চীন সহ কিছু দেশের জন্য প্রযোজ্য ছিল না। চীনের উপর অতিরিক্ত শুল্ক বহাল রাখা হয়েছে।
এই ইস্যুতে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতা এবং ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে, এখন কংগ্রেসের তদন্তের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা