যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত সম্প্রতি এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের পক্ষে রায় দিয়েছে। এই রায়ে ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এর ফলে উপাসনালয়গুলোতে ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘিত হচ্ছে কিনা, সেই নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্মীয় গোষ্ঠীর সদস্যরা। তারা বলছেন, এই নীতির কারণে উপাসনালয়গুলোতে আসা মানুষের সংখ্যা কমে গেছে।
তাদের আশঙ্কা, অভিবাসন কর্মকর্তাদের উপস্থিতির কারণে ধর্মীয় পরিবেশে ভীতি তৈরি হয়েছে, যা ধর্ম পালনে বাধা সৃষ্টি করছে।
তবে আদালতের বিচারক ডাবনি ফ্রিডরিখ, যিনি ট্রাম্পের সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত, প্রাথমিক পর্যায়ে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। বিচারক মনে করেন, এখনই এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ নেই।
তার মতে, উপাসনালয়গুলোকে বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, এমনটা প্রমাণ হয়নি।
আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে, অভিবাসন কর্মকর্তারা এখন থেকে উপাসনালয়গুলোতে অভিবাসন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতি অনুযায়ী, কর্মকর্তাদের ‘সাধারণ জ্ঞান’ এবং ‘বিবেচনা’ প্রয়োগের মাধ্যমে এই ধরনের কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, অভিবাসন কর্মকর্তাদের উপাসনালয়ে প্রবেশে কিছু বিধিনিষেধ ছিল।
আবেদনকারীরা বলছেন, এই নতুন নীতি যুক্তরাষ্ট্রের ৩০ বছরের পুরনো একটি নীতির পরিপন্থী। সেই নীতি অনুযায়ী, ‘সংবেদনশীল স্থান’ অথবা ‘সুরক্ষিত এলাকা’ হিসেবে পরিচিত উপাসনালয়গুলোতে অভিবাসন কর্মকর্তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা যেত না।
আদালতে শুনানিতে আবেদনকারীরা কিছু ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরেন, যেখানে অভিবাসন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি দেখা গেছে। এর মধ্যে একটি চার্চে অভিবাসী আটকের ঘটনা এবং একটি ডে কেয়ার সেন্টারে অভিবাসন বিভাগের তল্লাশির অভিযোগও রয়েছে।
এছাড়াও, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কাছে অভিবাসন কর্মকর্তাদের নজরদারির কয়েকটি ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
এই মামলার রায় আসার পাশাপাশি, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতি নিয়ে দেশটির বিভিন্ন আদালতে আরও অনেক মামলা চলছে। এর আগে, কিছু আদালত অভিবাসন সংক্রান্ত কিছু কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল, আবার কোনো কোনো আদালত সরকারের পক্ষেই রায় দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং অভিবাসন নীতি নিয়ে বিতর্ক আরও বাড়ছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস