যুক্তরাষ্ট্রের চীন থেকে খেলনা আমদানির ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্বজুড়ে খেলনা শিল্পে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ব অর্থনীতির ওপর, যা বাংলাদেশকে প্রভাবিত করতে পারে।
খবর বলছে, এই শুল্কের কারণে খেলনার দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে, যা ক্রেতাদের জন্য উদ্বেগের কারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রায় ৮০ শতাংশ খেলনা আসে চীন থেকে। এই বিপুল পরিমাণ খেলনার ওপর এমন উচ্চহারে শুল্ক আরোপের ফলে খেলনা প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে।
ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক এমজিএ এন্টারটেইনমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আইজ্যাক লারিয়ান জানিয়েছেন, তাদের তৈরি জনপ্রিয় ব্রান্ড ব্র্যাটজ এবং এলওএল সারপ্রাইজ ডলের দামও বাড়াতে হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই শুল্ক তাদের ব্যবসার জন্য হুমকি স্বরূপ।
এই শুল্ক আরোপের মূল উদ্দেশ্য হলো, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে উৎপাদন বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। কিন্তু অনেক খেলনা প্রস্তুতকারক মনে করছেন, এর ফল উল্টো হতে পারে।
কারণ, চীনের পাল্টা শুল্কের কারণে তাদের যুক্তরাষ্ট্রের কারখানায় কর্মী ছাঁটাই করতে হতে পারে। লারিয়ান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কারখানায় খেলনা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, বিশেষ করে ডলের চুল সংগ্রহ করা কঠিন।
অন্যদিকে, অনেক কোম্পানি চীন থেকে তাদের উৎপাদন সরিয়ে নিতে চাইছে, কিন্তু এতে বেশ কিছু সমস্যা দেখা যাচ্ছে। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে খেলনা ব্যবসার অবকাঠামো তৈরি করা সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।
খেলনা প্রস্তুতকারকদের মতে, স্বল্প মেয়াদে এর কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমানে, খেলনা শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেক কোম্পানি তাদের পণ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ, শুল্কের পরিমাণ সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হতে পারছে না।
এর ফলে, তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতির কারণে শুধু খেলনা শিল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, বরং এর প্রভাব বিশ্ব বাণিজ্য এবং সরবরাহ শৃঙ্খলেও পড়বে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোও এর শিকার হতে পারে।
কারণ, চীন থেকে খেলনা আমদানি এবং বিশ্ব বাণিজ্যের ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল। যদি খেলনার দাম বাড়ে, তবে তা সরাসরি ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে।
এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিকল্প বাজার খুঁজে বের করতে হতে পারে এবং বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে প্রস্তুতি নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন