প্রিন্স হ্যারির যুক্তরাজ্যে নিরাপত্তা বিষয়ক আইনি লড়াই এখনো চলছে, এবং তিনি এই লড়াইয়ে ‘ক্লান্ত’ হয়ে পড়েছেন। ব্রিটিশ রাজ পরিবারের সদস্য প্রিন্স হ্যারি, যিনি বর্তমানে স্ত্রী মেগান মার্কেলকে নিয়ে ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করেন, যুক্তরাজ্যে তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল রাখার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার সূত্রে জানা যায়, হ্যারির ধারণা, তার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল তাকে ‘ব্রিটিশ জীবনযাত্রায়’ ফিরে আসতে বাধ্য করা। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি হোম অফিসের (যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) বিরুদ্ধে মামলা করেন। তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই মামলায় তিনি ‘হতাশ’ হয়ে পড়েছেন।
লন্ডনের একটি আপিল আদালতে সম্প্রতি দুদিনের শুনানির পর প্রিন্স হ্যারি জানান, তার নিরাপত্তা সরিয়ে নেওয়াটা ‘সহজভাবে মেনে নেওয়া কঠিন’। এমনকি গণমাধ্যমের সঙ্গে তার অন্যান্য মামলার চেয়েও এই মামলাটি তার কাছে ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’। তিনি মনে করেন, যুক্তরাজ্যে সন্তানদের নিয়ে যাওয়াটা তার জন্য এখন অনিরাপদ।
শুনানির অধিকাংশ বিষয় গোপন রাখা হয়েছে, কারণ এতে ‘সংবেদনশীল’ তথ্য ছিল। প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, ‘এই মামলার শুনানিতে যা প্রকাশ করা হয়েছে, তা দেখে আমি হতাশ’। তিনি আরও জানান, এই মামলার রায় তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফেব্রুয়ারিতে তিনি আদালতে এই মামলায় হেরে গেলেও, তিনি এখনো আশা ছাড়েননি।
প্রিন্স হ্যারির ধারণা, তার বাবা কিং চার্লস এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল রাখতে হস্তক্ষেপ করতে পারতেন। কারণ রাজার ব্যক্তিগত সচিব স্যার ক্লাইভ অলডারটন, রাজকীয় এবং ভিআইপি বিষয়ক নির্বাহী কমিটির সদস্য। যদিও বাকিংহাম প্যালেস জানিয়েছে, নিরাপত্তা বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।
জানা যায়, হ্যারি এবং মেগান রাজকীয় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পাঁচ বছর আগে, নিরাপত্তা বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় অলডারটন ওই কমিটিতে ছিলেন না। প্রাসাদ সূত্রে খবর, ‘নিরাপত্তা এবং সরকারি নীতি বিষয়ক বিষয়ে মন্তব্য করা বা হস্তক্ষেপ করা যথাযথ নয়।’
প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে তার বাবা এবং ভাইয়ের সম্পর্ক এখনো স্বাভাবিক হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে রাজা তৃতীয় চার্লসের ক্যান্সার ধরা পড়ার পর হ্যারি তার সঙ্গে দেখা করেন, কিন্তু তারপর তাদের আর দেখা হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ইস্টার-এর পরেই তিনজন বিচারকের একটি প্যানেল এই আপিলের রায় জানাবেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান