আর্ন্তজাতিক ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন? কিন্তু কিভাবে শুরু করবেন, তা নিয়ে দ্বিধা? তাহলে এই খবরটি আপনার জন্য।
বেলজিয়ামের ২৫ বছর বয়সী লুনা বুটিয়েন্স-এর আমেরিকার ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শুনলে হয়তো আপনার দ্বিধা দূর হবে।
লুনা, যিনি পেশায় একজন ওয়েফার বিক্রেতা, গত জানুয়ারিতে ৪99 মার্কিন ডলারের একটি ‘আমট্রাক রেল পাস’ কিনে পুরো যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন।
আকাশপথে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছানোর পরিবর্তে, তিনি বেছে নিয়েছিলেন ট্রেনের জানালা দিয়ে দেশটিকে দেখার এক অসাধারণ উপায়।
লুনার এই ভ্রমণ মোটেও পূর্বপরিকল্পিত ছিল না।
যাত্রা শুরুর মাত্র দু’দিন আগে তিনি টিকিট কাটেন। তিনি জানান, “হঠাৎ করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া।
তবে এখন মনে হয়, এটাই ছিল আমার জীবনের সেরা একটি অভিজ্ঞতা।”
ট্রেনে ভ্রমণের সময় তিনি উপলব্ধি করেন, গন্তব্যে পৌঁছানোর চেয়ে যাত্রাটাই এখানে আসল।
বিমানের মতো এখানে সময় কাটানোর তাড়া নেই।
বরং অচেনা মানুষের সঙ্গে গল্প করা, কার্ড খেলা অথবা প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।
লুনার ভাষায়, “এখানে সময় যেন থমকে যায়।”
আমট্রাকের এই রেল পাস ব্যবহার করে লুনা নিউইয়র্ক থেকে শুরু করে মিয়ামি, ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো, ডেনভার, সান ফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস, সান দিয়েগো এবং নিউ অরলিন্সসহ আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ঘুরেছেন।
ট্রেনের কামরায় বসার জায়গাগুলো বেশ আরামদায়ক ছিল, বিশেষ করে রাতের বেলা ভ্রমণের জন্য।
যদিও কয়েক রাত ট্রেনের সিটে ঘুমানোর পর তার সামান্য শারীরিক অসুবিধা হয়েছিল, তবুও ভ্রমণের স্মৃতিগুলো তার কাছে অমূল্য।
লুনা জানিয়েছেন, ভ্রমণের সময় তিনি স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে যে আন্তরিকতা পেয়েছেন, তা ছিল অসাধারণ।
অচেনা মানুষজন তাকে আপন করে নিয়েছিল, যা তার একাকী ভ্রমণে সাহস জুগিয়েছে।
আমট্রাকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই রেল পাস ব্যবহার করে ৩০ দিনের মধ্যে যে কোনও রুটে ১০টি পর্যন্ত ভ্রমণ করা যায়।
এই পাসের মাধ্যমে ভ্রমণকারীরা লাগেজ নিয়েও চিন্তা মুক্ত থাকতে পারেন, কারণ দুটি হ্যান্ডব্যাগেজ এবং একটি ব্যক্তিগত জিনিস বিনামূল্যে নেওয়ার সুযোগ থাকে।
লুনার মতে, যারা এমন ভ্রমণের পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য এই রেল পাস-এর খরচ খুবই সামান্য।
কারণ, এত কম খরচে এতগুলো শহর ঘুরে আসা সত্যিই অসাধারণ।
লুনা তার এই ভ্রমণের সময়কাল আরও বাড়াতে চেয়েছিলেন, তাই অতিরিক্ত টিকিটও কিনেছিলেন।
সবমিলিয়ে, তিনি প্রায় ২৩0 ঘণ্টা ট্রেনে কাটিয়েছেন।
এমনকি এত সময় কাটানোর পরও তার ভ্রমণের নেশা এতটুকুও কমেনি।
সুতরাং, যারা নতুন কিছু করতে চান, যাদের মধ্যে অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ রয়েছে, তারা লুনা বুটিয়েন্সের এই অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারেন।
তথ্য সূত্র: পিপল