যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন কর্তৃক ফেডারেল তহবিলের ওপর কোপ বসানো নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের গভর্নর মাওরা হিলি। রবিবার (CBS) এর ‘ফেইস দ্য নেশন’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গভর্নর হিলির মতে, হার্ভার্ডের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা খাতে অর্থায়ন কমানোর ফলে, দেশের উদ্ভাবনী ক্ষমতা হ্রাস পাবে। এর ফলে মেধাবী গবেষকরা উন্নত ভবিষ্যতের আশায় অন্য দেশে পাড়ি জমাতে পারেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে দশকের পর দশক ধরে বিনিয়োগের পর এমনটা হওয়া অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, এর ফলস্বরূপ রোগীদের চিকিৎসায়ও খারাপ প্রভাব পড়বে। সাক্ষাৎকারে গভর্নর হিলি বোস্টন চিলড্রেন’স হাসপাতালের উদাহরণ তুলে ধরেন, যেখানে দেশের সবচেয়ে অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা করা হয়।
তিনি উল্লেখ করেন, ফেডারেল তহবিল কমানোর কারণে এই ধরনের হাসপাতালগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের ছাঁটাই এবং ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য চলমান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে।
গভর্নর হিলি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের কারণে চীনসহ অন্যান্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের আকৃষ্ট করতে পারে। তিনি মনে করেন, দেশের অর্থনীতির জন্য এটি একটি খারাপ দৃষ্টান্ত।
অন্যদিকে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট লি বোলিংগার সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ এবং ‘ভীতি প্রদর্শনের কৌশল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি একে একাডেমিক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত বলেও মন্তব্য করেন।
জানা যায়, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ফেডারেল সরকারের কিছু দাবি মেনে নিতে রাজি না হওয়ায় তাদের প্রায় ২.৩ বিলিয়ন ডলারের তহবিল স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির করমুক্ত সুবিধাও বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে, যা সম্ভবত একটি অবৈধ পদক্ষেপ।
এই বিতর্কের প্রেক্ষাপটে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় তাদের ফেডারেল তহবিল পুনরুদ্ধারের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু শর্ত মেনে নিয়েছে। এর মধ্যে ছিল ক্যাম্পাসে মুখ ঢাকা নিষিদ্ধ করা, নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নতুন উপাচার্যের হাতে দেওয়া।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান