যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের সুমি শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র নিন্দা সত্ত্বেও, এই হামলার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে চলমান শান্তি আলোচনা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
রবিবার দিনের আলোয় আবাসিক এলাকায় চালানো এই হামলায় ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একটি ট্রলি বাস ও কয়েকটি গাড়ি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অনেকের মরদেহ পাওয়া গেছে।
ইউক্রেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত দুইজন শিশু রয়েছে। এই ঘটনায় আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিন্দা জানানো হলেও, দেশটির নীরবতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। বিশেষ করে, যখন রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেসামরিক নাগরিক নিহত হচ্ছে, তখনও যুক্তরাষ্ট্র কেন রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, তা অনেকের কাছে স্পষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা স্টিভ উইটকফ বর্তমানে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার দায়িত্বে রয়েছেন। সম্প্রতি তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, উইটকফ ইউক্রেনের চারটি প্রদেশ—যেগুলো বর্তমানে রাশিয়ার আংশিক দখলে রয়েছে—তাদের রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দিয়েছেন।
তবে, সুমি শহরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর এমন ভয়াবহ হামলার ঘটনা এবং একই সময়ে উইটকফ ও পুতিনের ছবি প্রকাশ পাওয়ার পর অনেকেই এই শান্তি আলোচনাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন। অনেকে মনে করছেন, রাশিয়া যদি দিনের বেলায়ও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালাতে পারে, তাহলে তাদের সঙ্গে আলোচনার কোনো অর্থ নেই।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি আশা করছেন, ট্রাম্প সম্ভবত বুঝতে পারবেন যে পুতিন আলোচনার টেবিলে আন্তরিক নন। তবে, হোয়াইট হাউস এখনো পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সুমির ঘটনা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বাধ্য করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান