যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন একজন শীর্ষস্থানীয় বিনিয়োগকারী। বিখ্যাত হেজ ফান্ড ম্যানেজার ও বিলিয়নেয়ার রে ডালিয়ো আশঙ্কা করছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির ফলস্বরূপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত মন্দার থেকেও খারাপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে।
এনবিসি’র ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডালিয়ো বলেন, “আমার মনে হয়, আমরা এখন এমন একটা সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি এবং মন্দার খুব কাছাকাছি রয়েছি। যদি সবকিছু সঠিকভাবে পরিচালনা করা না হয়, তাহলে আমি মন্দার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।
ডালিয়োর মতে, মন্দা হলো টানা দুটি প্রান্তিকে জিডিপি-র (GDP) ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, “আমরা এর চেয়ে অনেক গভীর কিছু অনুভব করছি। আমরা আর্থিক ব্যবস্থার অবক্ষয় দেখছি।
তিনি মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৩০-এর দশকের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনীয়। ডালিয়ো উল্লেখ করেন, শুল্ক বৃদ্ধি, ঋণের বোঝা এবং একটি প্রভাবশালী শক্তির উত্থান – এই বিষয়গুলো বিদ্যমান কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন, “ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এমন ঘটনা বারবার ঘটেছে। তাই, শুল্ক, ঋণ এবং ক্ষমতা পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো বিবেচনা করলে বোঝা যায়, এই পরিবর্তনগুলো খুবই অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। কীভাবে এটি মোকাবিলা করা হবে, তার ওপর নির্ভর করে পরিস্থিতি মন্দার চেয়েও খারাপ হতে পারে, অথবা ভালোও হতে পারে।
ডালিয়ো ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দা সম্পর্কে সঠিক পূর্বাভাস দিয়েছিলেন। তিনি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
বিনিয়োগকারী ডালিয়ো মনে করেন, বাজেট ঘাটতি জিডিপি’র ৩ শতাংশে নামিয়ে আনা গেলে এবং বাণিজ্য ঘাটতিগুলো সঠিক পথে পরিচালনা করা গেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব। তিনি মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যদের প্রতি ‘৩ শতাংশের প্রতিশ্রুতি’ রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
যদিও ট্রাম্প প্রশাসন চীনের পণ্য বাদে অন্যান্য সব মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশে স্থগিত করেছে, তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, ক্ষতি যা হওয়ার তা এরই মধ্যে হয়ে গেছে। বিশেষ করে, তারা ডলারের আধিপত্য হ্রাসের বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান